আনসার আল ইসলামের খোঁজে গোয়েন্দা পুলিশ

রাজধানীতে ব্লগার নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় নিলয় হত্যার দায় স্বীকারকারী আনসার আল ইসলাম নামের সংগঠনটির অস্তিত্ব বাংলাদেশে আছে কি না, তা খুঁজতে মাঠে নেমেছে গোয়েন্দা পুলিশ। আদৌ তাদের কার্যক্রম এ দেশে আছে, নাকি হত্যার পর অন্য কেউ এ ধরনের বিবৃতি পাঠাচ্ছে, তাও খতিয়ে দেখা হবে।

শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে উপকমিশনার মুনতাসিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, প্রতিবারই ব্লগার হত্যার পর একটি সংগঠন দায় স্বীকার করে গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠায়। অতীতে এই সংগঠনের কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। এমনকি ওই নামে কোনো সংগঠন আছে কি না, তারও কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে এবার এই সংগঠনের ব্যাপারে জোরালোভাবে মাঠে নেমেছে গোয়েন্দা দল। বের করা হবে আসলে এ রকম কোনো সংগঠন থেকে বিবৃতি দেওয়া হয়, নাকি অন্য কেউ সংগঠনের নাম ব্যবহার করে এমন বিবৃতি পাঠায়।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নিলয় হত্যায় জড়িতদের এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। প্রাথমিক আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। সিআইডি থেকে টেকনিক্যাল সাপোর্ট দেওয়া হচ্ছে। পুলিশের সব শাখা মাঠে কাজ করছে। আশা করি খুব শিগগির হত্যাকারীরা গ্রেফতার হবে। আলামতে যেসব তথ্য পাওয়া যাবে, সেইসব নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।

এ ছাড়া নিলয়ের কর্মস্থলে কারও সঙ্গে শত্রুতা ছিল কি না, তাও খতিয়ে দেখা হবে।

থানায় জিডি না নেওয়ার বিষয়ে উপকমিশনার বলেন, বিষয়টি তদন্ত করা হবে। যদি কোনো থানার পুলিশ সদস্য জিডি না নিয়ে থাকেন, তবে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এখন পর্যন্ত যতজন ব্লগার হত্যা হয়েছে সুনির্দিষ্ট করে কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি- এর উত্তরে তিনি বলেন, এ কথা পুরোপুরি সত্য নয়। রাজীব হত্যার খুনিরা ধরা পড়েছে। ওয়াশিকুর হত্যায় জড়িতরা ধরা পড়েছে। তাদের বিচারকাজ চলছে। বাকিদের ব্যাপারে তদন্ত শেষ হয়নি। তারাও ধরা পড়বে।

প্রসঙ্গত, ব্লগার নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় নিলয়কে শুক্রবার জুমার নামাজের সময় খিলগাঁও থানার গোড়ান এলাকার ১৬৭ নম্বরের পঞ্চম তলায় ভাড়া বাসায় গলা কেটে হত্যা করে কয়েকজন দুর্বৃত্ত। এ সময় নিলয়ের স্ত্রী আশা মনি ও শ্যালিকাকে বারান্দায় বেঁধে রাখা হয়। পরে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের মর্গে পাঠায়।

এর আগে মিরপুরে রাজীব, টিএসসি চত্বরে অভিজিৎ, হাতিরঝিলের পাশে ওয়াশিকুর বাবু ও সিলেটে অনন্ত বিজয় দাশকে একইভাবে হত্যা করা হয়। এসব ঘটনায় কয়েকজনকে গ্রেফতার করলেও অন্যদের ব্যাপারে পুলিশ কিছু বলতে পারছে না। ব্লগার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্লগারদের হত্যায় সঠিক সময়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ায় এসব হত্যাকাণ্ড বেড়েই চলেছে।



মন্তব্য চালু নেই