আত্রাইয়ে আলু ক্ষেতে লেট ব্লাইট রোগে দিশেহারা কৃষক

কাজী আনিছুর রহমান : নওগাঁর আত্রাইয়ে প্রতিকুল আবহাওয়ার কারণে উপজেলার শতশত বিঘা আলুক্ষেত লেট ব্লাইট (পচাঁকানা) রোগে আক্রান্ত হয়েছে। প্রতিকারে কোন আশানুরূপ সুফল না পাওয়ায় আলু চাষীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এদিকে প্রতিকারের জন্য মাঠ পর্যায়ে সর্বক্ষণিক তৎপর রয়েছে উপজেলা কৃষি বিভাগ।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা যায়, উপজেলার ৮ ইউনিয়নে সর্বত্রই আলুক্ষেতে পচাঁকানা রোগে আক্রান্ত হয়েছে। কোন কোন মাঠে ব্যাপক হারে আক্রান্ত হয়েছে। অপরদিকে লেট ব্লাইট (পচাঁকানা) রোগ মোকাবেলা করতে উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর কর্মকর্তা, কর্মচারী কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করতে মাঠ পর্যায়ে তৎপর রয়েছে। এই উপজেলা কৃষি নির্ভরশীল উপজেলা। রবিশষ্যের মধ্যে অন্যতম ফসল হচ্ছে আলুচাষ। প্রতিটি কৃষকই কমবেশী আলু চাষ করে থাকে। আবার অনেক কৃষক ৮-১০ বিঘা বা তারও বেশী আলু চাষ করেছে বলেও জানা গেছে। কৃষকদের লাভজনক ফসল আলুচাষ। অধিকাংশ কৃষকেরা অর্জিত আলু বিক্রি করে সংসারের অধিকাংশ চাহিদা পূরুন করে। এছাড়া সারা বছর তরকারী খাবারের আলু রেখে দেয় কৃষকেরা। এজন্য কৃষকেরা আলু ক্ষেতের উপর অধিক যতœশীল হয়ে থাকে।

উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৮ ইউনিয়নে প্রায় ২৭০০হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়েছে। জমিতে আলুগাছ জমে উঠেছে। কৃষকেরা আলুর বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছেন। সম্প্রতি হঠাৎ ঘন কুয়াশা ও গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি পড়তে থাকে। তারপর থেকেই শীত ঝেঁকে বসে ও রাতে ঘনকুয়াশা পড়তে থাকে। কোন কোন দিন বেলা ১২ টার আগে সূর্য্যরে মুখ দেখা যায় না। প্রতিকুল আবহাওয়া নেমে আসার কারনে আলুগাছে পচাঁকানা রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে।

এদিকে কৃষকদের অভিযোগ কিছু নামধারী কোম্পানীর নিম্নমানের কীটনাশক বাজার ছেঁয়ে গেছে। যে কীটনাশক ছিটিয়ে কৃষকেরা কোন ফল পাচ্ছে না। এতে কৃষকেরা আর্থিকভাবে ক্ষতির পাশাপাশি নাজেহাল হয়ে পড়ছে নিম্ন আয়ের বা মধ্যম শ্রেনীর কৃষকেরা।

্উপজেলার তারাটিয়া গ্রামের কৃষক করিম হোসেন জানান, আমি এক বিঘা জমি আলু চাষ করেছে। সে আলুতে ইডোমিলগোল্ড সহ ৩ প্রকার কীটনাশক ছিটিয়ে কোন ফল হয়নি এখন আমি কি করবো ভেবে পাচ্ছি না।

উপজেলার বজ্রপুর গ্রামের কৃর্ষক মোঃ সহিদুল ইসলাম বলেন সে দেড় বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছে। বিভিন্ন কোম্পানীর কীটনাশক ব্যবহার করার পরও পচাকানা রোগ সারাতে পারেনি। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার অর্ধশতাধিক কৃষকের সংগে কথা বললে তারা একই সমস্যার কথা জানান। গত কয়েকদিন সকাল থেকেই আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ও গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হওয়ায় কৃষকরা আরও হতাশ হয়ে পড়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কে এম কাউছার জানান, আবহাওয়া জনিত কারনে আলুক্ষেতে পচাঁকানা রোগ দেখা দিয়েছে। তবে যে সকল ক্ষেতে এখনও পচাকানা রোগ ধরেনি সে ক্ষেত্রে কৃষকদের ডাইথেন এম-৪৫, ইন্ডোফিল, মেলোডি ডু-৩, ম্যানকোজেব ছিটাতে হবে এবং আক্রান্ত আলু ক্ষেতে সিকিউর, মেলোডি ডু-৩, ডাইথেন এম-৪৫ মিশ্রিত করে ছিটালে প্রতিকার পাওয়া যাবে।



মন্তব্য চালু নেই