আটক রবিনই কি সেই অনুসরণকারী যুবক?

চট্টগ্রামে প্রকাশ্য দিবালোকে পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যায় ‘মূল পরিকল্পনাকারী’ যুবক শাহজামান ওরফে রবিনকে (২৮) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, রবিনই সিসি ক্যামেরার ফুটেজে ধরা পড়া অনুসরণকারী যুবক।

শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) নিয়মিত ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান কমিশনার ইকবাল বাহার।

তিনি জানান, শনিবার সকালে রবিন নামে এই যুবককে নগরীর বায়েজিদ থানার শীতলঝর্ণা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রবিন লাকসামের জনৈক শাহজাহানের পুত্র। পড়াশুনা করেছে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত।

কমিশনার ইকবাল বাহার বলেন, ‘মিতু হত্যার সময় ঘটনাস্থলে মোবাইলে কথা বলতে বলতে রাস্তা পার হয়ে যে যুবক হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয় আমরা সন্দেহ করছি রবিনই সে যুবক। তাকে আটক করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে এ ব্যাপারে তথ্য আদায়ের চেষ্টা করা হচ্ছে।’

ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ঘড়ির কাঁটায় তখন ৬টা ৩২ মিনিট। এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু তার সন্তান মাহিরের হাত ধরে গলির মুখে এসে পৌঁছান। ঠিক এর ১৫ সেকেন্ড পর বিপরীত প্রান্তে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে আগে থেকেই অপেক্ষায় থাকা এক যুবক মোবাইলে কথা বলতে বলতে তাকে অনুসরণ করে পেছন পেছন হাঁটতে থাকেন।

৬টা ৩২ মিনিট ১৪ সেকেন্ডে তিনি ওয়েল ফুডের সামনে পৌঁছানোর সাথে ১ সেকেন্ডের ব্যবধানে পেছন থেকে দৌঁড়ে মিতুর দিকে এগিয়ে যায় ঘাতক। ঠিক একই সময়ে মোটরসাইকেল নিয়ে আগে থেকেই নিরিবিলি হোটেলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা দুই যুবক মিতুর উপর হামলা করে। হামলা শুরু এবং শেষ করে মোটরসাইকেলে উঠতে ঘাতকরা সময় নিয়েছে মাত্র ১৭ সেকেন্ড! এর মধ্যে মাহমুদা খানম মিতুর শরীরে করা হয়েছে ৮টি ধারালো অস্ত্রের আঘাত ও দুটি গুলি।

৬টা ৩৩ মিনিট ০৫ সেকেন্ডে খুনিরা কিলিং মিশন শেষ করে মোটরসাইকেলে চেপে বসে। তবে মোটরসাইকেলটি চালু হতে সময় নেয় ১৯ সেকেন্ড। ৬টা ৩৩ মিনিট ২৪ সেকেন্ডে তিন খুনি মোটর সাইকেলে চড়ে পালিয়ে যায়।

sp

যে মোটর সাইকেল চালাচ্ছিল, তার মাথায় ছিল হেলমেট। বয়স আনুমানিক ৩০ থেকে ৩৫। তার পেছনে দুজন বসা ‍দুজনের মধ্যে মাঝখানে বসা যুবকের হাতে ছিল ছুরি। আর পেছনে বসা তৃতীয়জনের হাতে ছিল পিস্তল। ধারণা করা হচ্ছে, এই তৃতীয়জনই ছিল আটক রবিন।

এর আগে গত ৭ জুন রাতে হাটহাজারী উপজেলার পশ্চিম ফরহাদাবাদ থেকে এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সাবেক শিবির নেতা আবু নছর গুন্নুকে (৪০) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এছাড়াও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটর সাইকেল ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে সন্দেহভাজন কালো রঙের মাইক্রোবাস উদ্ধার করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে মাইক্রোবাসের চালককেও।

গত ৫ জুন সকাল ৭টার দিকে নগরীর জিইসি মোড়ে প্রকাশ্যে গুলি করে পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতুকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ছেলেকে নিয়ে ক্যান্টনমেন্ট স্কুলে যাওয়ার সময় এ ঘটনা ঘটে। অতি সম্প্রতি বাবুল আক্তারের পদোন্নতির পর ঢাকায় অবস্থান করলেও তার স্ত্রী ছেলে-মেয়েকে নিয়ে নগরীর জিইসি এলাকার একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন।

সেই হত্যা দৃশ্যের ভিডিও

https://youtu.be/_IkonsL64XA



মন্তব্য চালু নেই