আজ থেকেই সেনাবাহিনী চায় বিএনপি

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ওপর হামলাসহ রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় ‘সন্ত্রাসী কার্যকলাপ’ বাড়ছে অভিযোগ করে আজ বুধবার থেকেই সেনাবাহিনী মোতায়েন চেয়েছে বিএনপি।

বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মুখপাত্র আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, ‘২৬ তারিখে নয়, নির্বাচন কমিশিনের স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দিয়ে সেনাবাহিনীকে আজ বুধবার থেকেই নামানোর দাবি করছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘সেনাবাহিনী জনগণের শেষ আস্থার প্রতীক। তাই ঝুঁকি না নিয়ে দ্রুত সেনাবাহিনী মোতায়েন করুন। সরকার বা নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে কালক্ষেপণ করলে সন্ত্রাসীদের কর্মকা- আরো বাড়বে এবং সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে এর দায় সরকারকেই নিতে হবে।’

রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।

রিপন বলেন, ‘সেনাবাহিনীকে শুধু রাস্তায় টহলের কাজে রাখা যাবে না। এতে কার্যকর ফল পাওয়া যায় না। কারণ সেনাবাহিনী টহল দিয়ে যাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট জায়গায় সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ঘটার অতীত রেকর্ড আছে।’ তাই এই বাহিনীকে প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে অবস্থান নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি।

শনিবার থেকে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় নেমেছেন দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এর মধ্যে টানা তিন দিন হামলার মুখে পড়লেও তিনি প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। মঙ্গলবারও রাজধানীর ফকিরাপুলে তিনি হামলার শিকার হন। এর আগের দিন কারওয়ান বাজারে তার গাড়িবহরে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় দুর্বৃত্তরা। রোববার উত্তরায় আওয়ামী লীগ সমর্থকদের বাধার মুখে পড়েন তিনি।

বিএনপি অভিযোগ জানিয়ে আসছে, সরকারের উস্কানিমূলক বক্তব্যের প্রেক্ষিতেই এসব হামলার ঘটনা ঘটছে। এ ছাড়া সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দল সমর্থিত মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের ওপর হামলা ও তাদের স্বাভাবিকভাবে গণসংযোগে নামতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ বিএনপির।

সরকারের দায়িত্বশীলদের সাম্প্রতিক সময়ে দেওয়া বক্তব্যে ‘উত্তেজনা’ ছড়াচ্ছে মন্তব্য করে রিপন বলেন, ‘বিএনপি উত্তেজনার বিপরীতে উত্তেজনা ছড়াতে চায় না। আমরা উত্তেজনা প্রশমিত করে গণতন্ত্র বিকশিত করার পক্ষে। ক্ষমতাসীনদের অনুরোধ করছি, তারা যেন উত্তেজনাকর বক্তব্য পরিহার করেন। তা না করে এই ধরনের অযাচিত বক্তব্য দিতে থাকলে তা নির্বাচনের জন্য ভালো হবে না।’

বিএনপি নেত্রী তার দলের সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় নামার কারণে সরকার ‘ভয়ে’ আছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন প্রচারণা নামায় ভয়ে আছে সরকার। সেজন্য তার ওপর হামলা করা হয়েছে। আমরা রাজনীতিকে রাজনীতি দিয়ে মোকাবিলা করার আহ্বান জানাই। কিন্তু সরকার তা না করে সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে। তারা খালেদা জিয়ার ওপর হামলার ঘটনা অস্বীকার করছে। কিন্তু অস্বীকার করে প্রকৃত সত্যকে আড়াল করা যাবে না। এটি স্পষ্টভাবে প্রমাণ হয়েছে সরকার সমর্থকরাই এই হামলা করেছে।’

বিএনপি নেত্রীর ওপর হামলার ঘটনা বাংলাদেশের রাজনীতিকে গভীর সংকটের দিকে নিয়ে যেতে পারে আশঙ্কা ব্যক্ত করেন দলটির দায়িত্বপ্রাপ্ত এই মুখপাত্র।

খালেদা জিয়ার ওপর হামলাকারীর অনেকেই আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন দাবি করে রিপন বলেন, ‘চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের নিয়ে যদি মেয়র প্রার্থীরা গণসংযোগ করেন, তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচন কীভাবে হবে? এতে ভোটাররা শঙ্কিত থাকবেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীকে অনুরোধ করব, এসব সন্ত্রাসী কর্মকা- বন্ধ করতে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনুন।’

রিপন জানান, মঙ্গলবার বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ওপর তৃতীয়বারের মতো হামলা ঘটনার পর বিকেলে ১৬টি দেশের কূটনীতিকরা তার কার্যালয়ে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ গাড়িগুলো পর্যবেক্ষণ করেছেন।

তিনি বলেন, ‘এর মাধ্যমে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের রাজনীতি সম্পর্কে নেতিবাচক খবর যাচ্ছে। দেশের ভাবমুর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে।’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বিএনপি নেতা মাহমুদুল হাসান, খালেদা রব্বানী, আসাদুল করিম শাহীন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।



মন্তব্য চালু নেই