‘আজীবন সম্মাননা’ পাচ্ছেন সাতক্ষীরার কিংবদন্তী অভিনেত্রী রানী সরকার

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের অধীনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে চলচ্চিত্রে বিশেষ অবদানের জন্য ‘আজীবন সম্মাননা’ লাভ করতে যাচ্ছেন কিংবদন্তী চলচ্চিত্রাভিনেত্রী রানী সরকার। ১১ মে এই সম্মাননা দেয়া হবে। আর এই সম্মাননা প্রাপ্তি নিয়ে শুধু রানী সরকারই নয় রানী সরকারের পরিবারের প্রত্যেক সদস্যসহ সাতক্ষীরা’র এলাকাবাসী দারুণ খুশি ও উচ্ছসিত।

রানী সরকারের পরিবারে এক অন্যরকম আনন্দের বন্যা বইছে। আগামী ১১ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে ‘আজীবন সম্মাননা’ গ্রহণের সময়কালে রানী সরকারের সঙ্গে পরিবারের কে কে যাবেন তা নিয়েও যেন চলছে এক বিশেষ প্রস্তুতি।

জীবনের সেরা এই মুহুর্তে পরিবারের সবাই কাছে থেকে সময়টি উপভোগ করতে চাচ্ছেন। রানী সরকারের জীবনের সেরা এই প্রাপ্তি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে রানী সরকার বলেন,‘‘ আমি অতি ক্ষুদ্র একজন মানুষ। আমার দেশের রানী, আমার দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে যে উপহার দিতে যাচ্ছেন, আমাকে যে সম্মান জানাতে যাচ্ছেন তাতে সত্যিই আমার জন্ম সার্থক হলো, জীবন ধন্য হলো। আমার অতীত জীবনের সব দুঃখ কষ্ট মুছে গেলো। প্রাণপ্রিয় প্রধানমন্ত্রীকে বলছি আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাবার ভাষা নেই। আমার প্রতি আপনার সম্মান আজ আমাকে আবেগাপ্লুত করেছে। করেছে ভাষাহীন। যদি কখনো কোন অন্যায় করে থাকি আপনি আমাকে ক্ষমা করবেন।’’ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দু’দফায় রানী সরকারকে বিশ লাখ টাকা দিয়ে সহায়তা করেছেন।

রানী সরকার বলেন,‘ দু’বার তারসঙ্গে দেখা হয়েছে, তিনি আমাকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে আদর করেছেন। এ কথা সত্যি যে প্রধানমন্ত্রী যদি আমাকে আর্থিক সহযোগিতা না করতেন তাহলে আমাকে পথে পথে ভিক্ষা করতে হতো। কিন্তু তিনি আমার শিল্পী জীবনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আমার সম্মান বাঁচিয়েছেন। তার এই ঋণ কোনভাবেই শোধ হবার নয়। আল্লাহ সবসময়ই তাকে যেন ভালো রাখেন, সুস্থ রাখেন।’’

রানী সরকারের জন্ম সাতক্ষীরার সোনাতলা গ্রামে। ১৯৫৮ সালে তিনি এ জে কারদারের নির্দেশনায় প্রথম চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। এর নাম ছিল ‘দূর হ্যায় সুখ কা গাঁও’। এরপর রানী সরকার অভিনয় করেন এহতেশামের ‘চান্দা’ চলচ্চিত্রে। সে সময় ছবিতে তিনি চিত্রনায়িকা শবনমের মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন।

এরপর রানী সরকার ‘তালাশ’, ‘বন্ধন’, ‘সঙ্গম’, ‘ইস ধারতি পার’, ‘পেয়সে’, ‘কেয়সে কাহু’, ‘আযান’, ‘কাঁচের দেয়াল’, ‘কাঁচ কাটা হীরে,’ ‘বেহুলা’, ‘আনোয়ারা’, ‘ছদ্মবেশী’, ‘ভাওয়াল সন্ন্যাসী’, ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘চন্দ্রনাথ’, ‘শুভদা’, ‘দেবদাস’সহ প্রায় তিনশত চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।



মন্তব্য চালু নেই