আজব এই আকাশেও নদী আছে, তাতে বন্যা হলে সর্বনাশ!

আমেরিকার দুকূল-হারানো নদী মিসিসিপিতে যে পরিমাণ জল রয়েছে, তার চাইতেও ১৫ গুণ বেশি জল ধরে সেই নদীতে। তাতে বান ডাকলে কী হতে পারে, তাই নিয়েই এই মুহূর্তে চিন্তিত আবহবিদরা। না, সেই নদী কিন্তু এই ধরার ধূলি মেখে সাগরমুখী নয়। সে নদীর বাস আকাশে।

‘অ্যাটমোস্ফেরিক রিভার’ নামে পরিচিত এই ‘নদী’ আসলে বায়ুমণ্ডলের খুব সংকীর্ণ এলাকা। ভূপৃষ্ঠের ক্রান্তীয় অঞ্চল থেকে উত্থিত জলীয় বাষ্পের বেশিরভাগটাই এখানে সঞ্চিত হয়। এমন আকাশ-নদী বিপুল পরিমাণের বৃষ্টিপাতের কারণ। সম্প্রতি গবেষকরা জানিয়েছেন, আকাশ নদীর ‘বন্যা’-য় মারাত্মক বিপদ ঘটে যেতে পারে। খুব কম সময়ের মধ্যে প্রবল পরিমাণ বৃষ্টিপাতে লুপ্ত হয়ে যেতে পারে কোনও উদ্ভিদ বা প্রাণীর প্রজাতিও। উষ্ণায়নের ফলে এই ‘বন্যা’-র সম্ভাবনা বাড়ছে বলেই মত প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা।

২০১১-এ উত্তর সান ফ্রানসিসকো অঞ্চলে নাটকীয় বৃষ্টি হয়। এই বৃষ্টির কারণ আকাশ-নদীর বন্যা। এর ফলে ওই অঞ্চলের একটি বিশেষ প্রজাতির ঝিনুক, ওয়াইল্ড অলিম্পিয়া অয়েস্টার ঝাঁকে ঝাঁকে মারা পড়ে। অনুমান করা হচ্ছে, ওই ঝিনুকদের সামগ্রিক সংখ্যার প্রায় ৯৭ থেকে ১০০ শতাংশই আজ লুপ্ত। ১৯৭০ দশকে ব্রিটেনে যে বিপুল বন্যা হয়েছিল, তার জন্য এই আকাশ-নদীই দায়ী।

আকাশ-নদীর বন্যার কারণ কিন্তু খুবই সাধারণ। গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের কারণে এই নদীগুলি তাদের জলকণা ধরে রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে। আর সে কারণেই ঘটে যাচ্ছে অপরিসীম বৃষ্টি। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ব্রায়ান চেং জানিয়েছেন, এই ‘বন্যা’-র ফলে উপকূলবর্তী অঞ্চলের প্রাকৃতিক ভারসাম্য ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাঁর মতে, ২০১১-র বৃষ্টিতে ঝিনুকের যে প্রজাতি লুপ্তপ্রায় হয়ে গিয়েছিল, তারা আবার ফিরে আসছে বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু কার্যত নতুন ঝিনুকগুলি আকারে ছোট, তাদের প্রজনন হারও কম। সুতরাং, এদেরকে সেই হারিয়ে যাওয়া প্রজাতি বলা যায় না। এর জন্য অবশ্যই দায়ী আকাশ-নদীর ‘বন্যা’।



মন্তব্য চালু নেই