আইএসের বিরুদ্ধে কে এই আজরাইল

বর্তমানে সবচেয়ে আলোচিত সন্ত্রাসী সংগঠন ‘দায়েস’ কিংবা ইসলামিক স্টেট। ২০১১ সালের শুরুর দিকে সিরিয়ার একাংশ দখল নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচনায় চলে আসে এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠি। পরবর্তীতে ইরাকের উল্লেখযোগ্য অংশও দখল করে নেয় ইসলামিক স্টেট। ইরাকে সফল অভিযান চালনার এক পর্যায়ে নিজেদের স্বতন্ত্র রাষ্ট্রকাঠামো তৈরি করে আরও নতুন ভূমি অধিগ্রহনের ক্রমাগত হুমকি দিতে থাকে সংগঠনটি।

একদিকে সিরিয়ার আলেপ্পো শহর এবং অন্যদিকে ইরাকের তিকরিতে শহরে এসে সংগঠনটি বাঁধার মুখে পিছু হটতে বাধ্য হয়। প্রথমত যৌথবাহিনীর বিমান হামলা, দ্বিতীয়ত ইরাকি বাহিনীর উপর্যুপরি আক্রমন ইসলামিক স্টেট বাহিনীকে পিছু হটতে বাধ্য করে। কিন্তু বিমান হামলা বা ইরাকি বাহিনীর বাইরেও আরও একটি বাহিনী প্রায় হঠ্যাৎ করেই ইসলামিক স্টেট বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যাপক সফলতা পেতে শুরু করে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মিডিয়া বলছে, হঠ্যাৎ করে গজিয়ে ওঠা এই বাহিনীটি মূলত ইরানের সমর্থন পুষ্ট শিয়া বাহিনী। এবং এই বাহিনীর প্রধান হলেন আবু আজরাইল নামের এক সাবেক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক।

আবু আজরাইল নিজেকে ইসলামিক স্টেটের সর্বনাশ হিসেবে দাবি করে নিজের ফেসবুক পাতায় অনেক বক্তব্য দিয়েছেন। ইসলামিক স্টেটের আর্বিভাবের পর আবু আজরাইলের মতো অন্য কোনো সেনা এতটা জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারেনি। ইতোমধ্যে তার ব্যাক্তিগত ফেসবুক পাতায় লাইকের সংখ্যা প্রায় তিনলাখ। ফেসবুকে তার পাতায় লেখা আছে ‘ফাদার অব দ্য আর্কেঞ্জেল অব ডেথ’।

এই নব্য শিয়া বাহিনী ইতোমধ্যে সাদ্দাম হোসেনর জন্ম শহরে তিকরিতের উল্লেখযোগ্য অংশ ইসলামিক স্টেট বাহিনীর কাছ থেকে দখল করে নিয়েছে। শুধু তাই নয়, ইসলামিক স্টেট বাহিনী যে কায়দায় যুদ্ধবন্দীদের হত্যা করেছে, ঠিক সেই একই কায়দায় শিয়া বাহিনীও ইসলামিক স্টেট(সুন্নী) বাহিনীকে হত্যা করছে। এবিষয়ে যদিও ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

আবু আজরাইলের আসল নাম ফালেহ আল রুবাইয়া। ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে প্রায় ছয়টি উল্লেখযোগ্য স্থানে তিনি লড়াই করেছেন। তবে সবচেয়ে প্রাণঘাতী লড়াই চালাচ্ছেন তিনি তিকরিতে। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এএফপিকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখছেন যে আমি স্কুলে গিয়ে শিশুদের সঙ্গে ভালো আচরণ করছি। কিন্তু আমার অন্য রুপটি দেখছে ইসলামিক স্টেট।’ আবু আজরাইল যুদ্ধে যোগদানের আগে ইরাকের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। শিক্ষার পাশাপাশি তায়াকান্ডো এবং শ্যুটিংয়ে বেশ দক্ষ তিনি। অবশ্য তিনি নিজেকে খাতিব ইমাম আলী মিলিশিয়া বাহিনীর সদস্য হিসেবে দাবি করেন। জঙ্গী সংগঠন বিশেষজ্ঞ ফিলিপি স্মিথ জানান, যে দলটির কথা আবু আজারাইল বলছেন সেটা মূলত গত গ্রীস্মে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং খুব দ্রুত তারা কৌশলগত দিক দিয়ে এগিয়ে গেছে। আমি শিয়া মিলিশিয়াদের কয়েক বছর ধরেই ফেসবুক এবং টুইটারে লক্ষ্য করছি। তবে এই সংগঠনটি প্রায় হঠ্যাৎ করেই মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। তাদের নিজস্ব ফেসবুক পাতা আছে, যেটা ২০১৪ সালের শেষের দিকে খোলা হয়েছে। এবং তারা সকলে মিলে আবু আজরাইল চরিত্রটিকে বেশ ভালোভাবে সাজিয়েছে।’



মন্তব্য চালু নেই