অসাধারণ সব গুণে ভরপুর তেতো করল্লা

করল্লা নামটা শুনলেই অনেকের চোখেমুখে বিরক্তির ছায়া ফুটে ওঠে। তেতো এই সবজিটিকে খুব সাবধানে এড়িয়ে চলেন অনেকে। ভুলেও মুখে তোলেন না করল্লার তরকারি। কিন্তু তারা কি জানেন এই করল্লার অসাধারণ সব স্বাস্থ্যগুণ? চলুন দেখে নিই অবহেলার এই সবজিটি আসলে আমাদের জন্য কতো উপকারী।

১) ফুসফুসের সমস্যা সমাধান
অ্যাজমা এবং সাধারণ সর্দিকাশির সমস্যা দূর করতে করল্লা সহায়ক। শুধু তাই নয়, করল্লার পাতা এবং তুলসি পাতার পেস্ট সকালে মধুর সাথে খেলে তা এসব সমস্যা কমিয়ে আনে।

২) লিভার সুস্থ রাখে
প্রতিদিন এক গ্লাস করল্লার জুস লিভারের সমস্যা দূর করে। টানা এক সপ্তাহ পান করলে সুফল পাবেন।

৩) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
ইনফেকশনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে করল্লা। করল্লা বা করল্লার পাতা সেদ্ধ করা পানি পান করুন প্রতিদিন। এটা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও কার্যকরী।

৪) ব্রণের সমস্যা দূর
ব্রণ, ত্বকের দাগ এবং ত্বকের ইনফেকশন দূর করতে কাজে আসতে পারে করল্লা। স্ক্যাবিস, রিংওয়ার্ম এবং সোরিয়াসিসের সমস্যাতেও এটি কার্যকর।

৫) ডায়াবেটিস
ডায়াবেটিসের জন্য করল্লা বেশ উপকারী। ইনসুলিনের মতো একটি উপাদান থাকার কারণে ব্লাড সুগার কমিয়ে আনতে সক্ষম করল্লা। আপনি যদি সুগার নিয়ন্ত্রণে আসার জন্য ওষুধ খান তাহলে করল্লা খাওয়ার ব্যাপারে ডাক্তারের পরামর্শ নিন, নয়তো সুগার বেশি কমে যেতে পারে।

৬) কোষ্ঠকাঠিন্য
করল্লায় অনেকটা ফাইবার থাকার কারণে এটি হজমে সহায়ক এবং কোষ্ঠকাঠিন্য কমিয়ে আনতে সাহায্য করে।

৭) কিডনি এবং ব্লাডার সুস্থ রাখে
কিডনি ও ব্লাডারের সার্বিক সুস্থতার জন্য খেতে পারেন করল্লা। এছাড়া কিডনি স্টোন সমস্যাতেও কাজে আসতে পারে করল্লা।

৮) হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্য ভালো রাখে
বেশ কিছু দিক দিয়ে হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে পারে করল্লা। খারাপ ধরণের কোলেস্টেরল কমিয়ে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায় করল্লা। এছাড়াও ব্লাড সুগার লেভেল কমায় বলে এর কারণে হৃৎপিণ্ড সুস্থ থাকে।

৯) ক্যান্সারের চিকিৎসা
ক্যান্সারের গ্রোথ কমাতে সাহায্য করতে পারে করল্লা। মাথা ও ঘাড়ের ক্যান্সারের গ্রোথ কমাতে করল্লার নির্যাস কাজে আসে বলে জানা গেছে গবেষণায়। এছাড়া অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের মেটাবলিজমে বাধা দেয় করল্লা।

১০) ওজন নিয়ন্ত্রণ
করল্লায় আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীর থেকে টক্সিক দূর করে। এটা মেটাবলিজম এবং হজমে সহায়ক, ফলে দ্রুত ওজন কমে। ১০০ গ্রাম করল্লায় মাত্র ১৭ ক্যালোরি থাকে এবং ফাইবার থাকে অনেক বেশি ফলে তা পেট ভরা রাখে।

করল্লা যদি বেশি তেতো মনে হয়, তাহলে দুইটি উপায়ে তেতো ভাব কমাতে পারেন। করল্লা কেটে লবণ মাখিয়ে রেখে দিন কমপক্ষে ১০ মিনিট। এরপর ধুয়ে রান্না করুন। অথবা অল্প লবণ দেওয়া পানিতে দুই মিনিট সেদ্ধ করে নিলেও এর তেতো ভাবটা কিছুটা কমে আসবে।

বিভিন্ন ধরণের ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট, ফ্ল্যাভানয়েড, ফলেট, ভিটামিন সি, বি কমপ্লেক্স ইত্যাদি আছে এতে। আপনার সার্বিক স্বাস্থ্য সুস্থ রাখার পাশাপাশি বিভিন্ন অসুখ উপশম করতেও এটি উপকারী। এবার ভেবে দেখুন, এসব জানার পরেও কি আপনি করল্লাকে এড়িয়ে যাবেন?



মন্তব্য চালু নেই