অলৌকিককন্যা রেশমার ঘরজুড়ে আলো…

সভারের রানা প্লাজার কথা মনে আছে নিশ্চয়ই? সেই ঘটনায় কেঁপে উঠেছিলো বাংলাদেশ। জেনেছিলো পুরো বিশ্ব। লাখ মানুষ কেঁদেছিলো। সেই ঘটনায় হঠাৎ করেই একটি মেয়ে মিডিয়ার সামনে আসে, পাল্টে যায পুরো চিত্রই। রিশমা সেই মেয়ের নাম। ধ্বংসস্তূপ থেকে ১৭ দিন পরে জীবিত উদ্ধার হন রিশমা।

সেই ঘটনার পর সরকারীভাবে একটি বেসরকারি পাঁচতারা হোটেলে চাকরীর ব্যবস্থা করে দেয়া হয়। কিন্তু সেই রেশমার এখন কী খবর?

রেশমা এখন স্বামী সন্তান নিয়ে ভালোই আছেন। এরই মধ্যে তার কোলজুড়ে এসেছে এক ফুটফুটে কন্যাসন্তান। তার নাম রেখেছেন রেদওয়ানা। ১০ মার্চ রাজধানীর আদ-দ্বীন হাসপাতালে রেদওয়ানার জন্ম হয়েছে। গত বছরের ১৪ জানুয়ারি আতাউর রহমান রাব্বির সঙ্গে তার বিয়ে হয়।

রাজধানীর গুলশানের কালাচাঁদপুর পাকা মসজিদের পাশে ৭ তলা ভবনের চতুর্থ তলায় দুই রুমের একটি ছিমছাম বাসায় স্বামী-সন্তানসহ বসবাস করছেন রেশমা।

ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়ার পর ২০১৩ সালের ৬ জুন হোটেল ওয়েস্টিনের হাউসকিপিং বিভাগে পাবলিক অ্যাম্বাসেডর পদে চাকরি পান রেশমা। এখনও তিনি ওই পদে চাকরি করছেন। সার্ভিস চার্জ ৩০ হাজার টাকাসহ বেতন পান ৩৫ হাজার টাকা। বছরে আড়াই হাজার টাকা করে দুই ঈদে বোনাসও পান। ১২ জানুয়ারি থেকে চার মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটিতে আছেন তিনি।

রেশমার স্বামী রাব্বি জানান, একমাত্র কন্যাসন্তানের জন্য একটি ডিপিএস করবেন। মেয়ে রেদওয়ানাকে ভালো জায়গায় পড়ালেখা করিয়ে মানুষের মতো মানুষ করতে চান তারা। রেশমা ও রাব্বি পরস্পর প্রেমের মাধ্যমেই সংসার বাঁধেন। রাব্বি একটি প্রাইভেট কোম্পানীতে চাকরি করেন। তার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ।

রেশমা আক্তারের বাবা আনসার আলী। মা জোবেদা বেগম। দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট থানার কুশিগাড়ি গ্রামে তার বাড়ি। ১৯৯৪ সালের ৩ আগস্ট রেশমার জন্ম। তিন বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট রেশমা। বাবা আনসার আলী মারা যাওয়ার পর মা দ্বিতীয় বিয়ে করেন বাবুল মিয়াকে।

ইতোমধ্যে পাল্টে গেছে, তাদের বাড়ি’র চিত্র। তিনটি পাকা ঘর তুলেছেন। আরো দু’টি পাকা ঘর তৈরির প্রস্তুতি চলছে। প্রতি মাসে ২ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে মায়ের কাছে পাঠায় রেশমা।

সরকারিভাবে প্রাপ্ত ৫০ হাজার, রানা প্লাজার ৫০ হাজার এবং বাড়ির জমি সংক্রান্ত বিরোধের সমঝোতায় এক ব্যক্তির কাছে প্রাপ্ত ৫০ হাজার এই মোট দেড় লাখ টাকায় ৩টি পাকা ঘর তুলেছেন রেশমার মা। আরো ২টি ঘর তোলার প্রস্তুতি চলছে।



মন্তব্য চালু নেই