সেলুন ও ম্যসাজ পার্লারের আড়ালে অবৈধ ব্যবসা কোনভাবেই থামছে না (ভিডিও)

চট্টগ্রাম শহরের কয়েকটি অভিজাত এলাকায় সেলুন বিউটি পার্লার ও ম্যাসাজ পার্লারের আড়ালে চলছে অনৈতিক বাণিজ্য যা একুশে টিভি সহ বিভিন্ন অনলাইন ওপএিকায় প্রতিবেদন হলেও পুলিশ বন্ধ করতে পারেনি। পুলিশ প্রশাসনের কতিপয় দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা মাসোহারার বিনিময়ে এ ধরনের অনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনার সুযোগ করে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, শহরের অভিজাত এলাকা খুলসী,পূর্ব নাসিরাবাদ, হালিশহর, চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা, সুগন্ধা ও অনন্যা আবাসিক এলাকায় সেলুন, বিউটি পার্লার ও ম্যাসেজ পার্লারের নামে জেন্টস পার্লার গড়ে তোলা হয়েছে। যেখানে সুন্দরী তরুণী দিয়ে প্রতিনিয়ত চলছে অনৈতিক কাজ। এসব পার্লারের ভিতরে কাপড়ের পর্দা টানিয়ে ছোট ছোট রুম তৈরী করা হয়েছে।

এসব জায়গায় আসা যাওয়া বাড়ছে উঠতি বয়সি যুবক আর ছাত্রদের। আর তাই মারাত্বক সামাজিক অবক্ষয়ের আশংকা করছেন সচেতন সমাজ। এ ব্যাপারে পুলিশ অনেকটা নীরব থাকায় হতাশ সাধারণ মানুষরা।

মহিলা পার্লারে পুরুষ প্রবেশ নিষেধ থাকলেও চট্টগ্রাম শহরের বেশকিছু অভিজাত এলাকার সেলুন, বিউটি পার্লার ও ম্যাসাজ পার্লারের ভেতরের দৃশ্য ভিন্ন।

ছিমছাম পরিপাটি পার্লার কিংবা ম্যাসাজ সেলুনের আড়ালে এসব জায়গায় চলছে মেয়েদের দিয়ে অনৈতিক কর্মকান্ড। মালিকদের দেখা না মেললেও কর্মরতরা জানান মহিলা র্পালারেই সেবা নিতে আসছে নানা বয়সি পুরুষ।

এ ধরনের কাজ সামাজিক অবক্ষয়ের সৃষ্টি করবে বলে আশংকা স্থানীয়দের। সেবার নামে এসব অনৈতিক কর্মকান্ড বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেবার দাবি স্থানীয়দের।

সম্প্রতি এসব অনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রমান সহ একুশে টিভির অনুসন্ধানী একটি রিপোর্ট ও ভিডিও দেখুন

বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানীর অভিজাত এলাকায় সেলুন, বিউটি পার্লার ও ম্যাসাজ পার্লারের আড়ালে চলছে অনৈতিক কর্মকান্ড। অভিযোগ আছে এই ধরনের অনৈতিক কর্মকান্ডের সুযোগ দিয়ে মোটা অংকের অর্থ মাসোয়ারা তুলছে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের কিছু দূর্নীতিবাজ কর্তাব্যক্তিরা।

বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর বন্দরনগরী চট্টগ্রাম। বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রাম শহরের প্রাণ কেন্দ্র পূর্ব নাসিরাবাদের জিইসি মোড়ের পাশেই এম এম টাওয়ারের নিচ তলায় আবস্থিত “স্টার সেলুন জেনস্ পার্লার”। বাইরে থেকে ভিতরের পরিবেশ অনুমান করাও কঠিন। ভিতরে প্রবেশ করলেই চোখে পড়বে ছিমছাম পরিপাটি সেলুন। অথচ এর মধ্যে চলছে ভয়ঙ্কর অনৈতিক কর্মকান্ড।

এক কোনায় ছোট একটা দরজা। ভিতরে ঢুকে দেখা গেল কাপড়ের পর্দা টানিয়ে ছোট ছোট রুম তৈরী করা হয়েছে। রাখা হয়েছে বেশ কিছু সুন্দরী যুবতী। এখানেই চলে যতসব অনৈতিক কর্মকান্ড। স্কুল-কলেজের ইঠতি বয়সী ছেলেরাসহ যুব-সমাজের একটি বড় অংশ এদের খরিদ্দার।

প্রতিটি রুমে রাখা আছে ছেলেদের সটস্ ও মেয়েদের এপ্রোন। এ্যানি নামে একজন খরিদ্দারকেও পাওয়া গেল হাতে নাতে। এ্যানি নাকি খেলোয়ার, এখানে এসেছেন শরীর ম্যাসাজ করতে।

এখান থেকে বের হয়েই আমরা পেয়ে যাই বাড়ির মালিকের ছোট ভাইকে। কথা হয় তার সাথে। আমরা কথা বলেছিলাম এই ভবনে কর্মরত কয়েকজন ব্যাক্তির সাথেও।

11081

নির্ভরযোগ্য তথ্য পেয়ে এরপর আমরা যাই শহরের খুলশী এলাকার সিডিএ এভিনিউ এ অবস্থিত লায়লা মজ্ঞিলে। এই ভবনের ৪র্থ তলায় অবস্থিত তানিম সেলুন এন্ড ম্যাসাজ পার্লার। তৃতীয় তলায় উঠার পর ৪র্থ তলায় উঠার সিড়ি দেখে বোঝার উপায় নেই যে উপরে মানুষ যাতায়াত করে।

উপরে উঠে দেখা গেল এখানেও একটি ছিমছাম সেলুন। খরিদ্দারদের বসার জন্য দামি দামি সব সোফা রয়েছে এখানে। তবে চুল কাটানোর জন্য কোনো খরিদ্দার চেয়ারে নেই।

রুমের এককোনে একটি মানুষের ছবি একে হাত দিয়ে দেখিয়ে দেওয়া হয়েছে ভিতরে যাওয়ার জন্য।

দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকতেই দেখা গেল ভিন্ন এক পরিবেশ। এখানে ঢুকতেই এখানকার মেয়েরা আমাদের উপর রীতিমতো চটে গিয়ে তাদের ক্ষমতার দম্ভ দেখানো শুরু করলো।

একজন খরিদ্দারকে পাওয়া গেল আপত্তিকর অবস্থায়। তার সাথে কথা বলতে চাইলে আমাদের ফাঁকি দিয়ে ছটকে পড়ার চেষ্টা করলো।

একপর্যায়ে এখানে কর্মরত ব্যাক্তি আমাদের নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে সেলুনে ঢোকার মূল গেটে তালা লাগিয়ে দিয়ে রের্কডকৃত ক্যাসেট ছিনিয়ে নেওয়ার হুমকি দিয়ে বিভিন্ন জনের কাছে ফোন করা শুরু করে। আমরা স্থানীয় পুলিশ প্রসাশনের সাথে যোগযোগ করলে তারা তালবাহানা শুরু করে।

পরবর্তীতে স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে যোগাযোগ করলে কিছুক্ষনের মধ্যে বেশ কয়েকজন্য সংবাদিক সেখানে উপস্থিত হয়।

স্থানীয় সাংবাদিকদের নিয়ে আবারো ভিতরের রুমে প্রবেশ করলে দেখা যায় এই পরিবেশের মধ্যেও তারা অনৈতিক কর্মকান্ডে ব্যস্ত। পাওয়া যায় একজন খরিদ্দারকে। কিছুক্ষন পরে সেখানে পুলিশ এসে উপস্থিত হয়। আমরা তাদের সাথে কথা বলি ।

পুলিশ একজন কর্মচারী, একজন খরিদ্দারসহ ৭ জন রারীকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পেরেছি মোটা অংকের উৎকোচ নিয়ে পুলিশ তাদেরকে ছেড়ে দিয়েছে এবং যথারীতি পরের দিন থেকেই এখানে আবারও অবৈধ কর্মকান্ড চলছে।

এই ব্যাপারে কথা বলার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কাউকে পাওয়া যায়নি।

সামাজিক অবক্ষয়ের এই সন্ধিক্ষণে এই ধরনের অনৈতিক কর্মকান্ড বন্ধে প্রশাসন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করবে এমনটাই প্রত্যাশা সবার।

সূত্র: একুশে টিভি।



মন্তব্য চালু নেই