ফিরে দেখা - জুলাই ০৯, ২০১০ঃ আমার ব্লগ থেকে

অবাধ যৌনতার কারনেই শিশু সামিউলকে জীবন দিতে হল! (ভিডিও)

[ আওয়ার নিউজের নতুন আয়োজন ফিরে দেখাঃ অতীতের আলোচিত সংবাদ বিভাগে আমরা নিয়মিতভাবে অতীতে সংবাদপত্র ও ব্লগে প্রকাশিত কোন আলোচিত ঘটনা তুলে ধরব। আওয়ার নিউজের সঙ্গে থাকুন ]

রাজধানীর আদাবরে শিশু খন্দকার সামিউল আজিম হত্যায় তার মা আয়শা হুমায়রা এশা জড়িত ছিলেন না বলে দাবি করেছে পুলিশ। আয়শার প্রেমিক শামসুজ্জামান ওরফে বাক্কু ওরফে আরিফ সামিউলকে অপহরণের পর শ্বাসরোধে তাকে হত্যা করে। পরে আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে সে কৌশলে আয়শাকে ফাঁসানোর জন্য মিথ্যা তথ্য দেয়। ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীর গতকাল বুধবার দুপুরে আদাবর থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান। তবে আয়শার বিরুদ্ধে হত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ আনা হতে পারে বলেও তিনি জানান। এদিকে সামিউলের লাশ উদ্ধারের পরপরই আয়শা কেন বারবার পালানোর চেষ্টা করেন এবং কিছু না জেনেও গ্রেফতারের পর কেন সব দোষ বাক্কুর ঘাড়ে চাপিয়ে দেন_ এ রকম কিছু প্রশ্নের সন্তোষজনক উত্তর পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক কাজী সাহান হক সমকালকে বলেন, তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। আয়শার সন্দেহজনক আচরণের কারণও খুঁজে দেখা হচ্ছে। তবে হত্যায় সরাসরি তার সংশ্লিষ্টতা এখনও পাওয়া যায়নি।

সংবাদ সম্মেলনে চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীর বলেন, আয়শার এক দেবরের নাম আরিফ। শামসুজ্জামান ওরফে বাক্কুকে নিরাপদে বাসায় ঢোকানোর জন্য তাকে আরিফ ছদ্মনামে নিরাপত্তারক্ষীদের কাছে পরিচয় করিয়ে দেন আয়শা। এ নামেই সে ওই বাসায় মাঝেমধ্যে যাতায়াত করত।

সর্বশেষ ২৩ জুন আয়শা ও বাক্কু পালিয়ে নতুন সংসার গড়ার পরিকল্পনা করে। ওই দিন সকালে সামিউলকে নিয়ে সে পুরান ঢাকায় গিয়ে একটি বস্তা কেনে। এরপর শাহবাগে এসে জুসের বোতলের মধ্যে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে সামিউলকে খেতে দেয়। জুস খাওয়ার

কিছুক্ষণের মধ্যে সামিউল অচেতন হয়ে পড়লে বাক্কু তাকে কোলে তুলে নেয়। রাত ১২টার দিকে সামিউলকে নিয়ে সে আদাবরের নবোদয় হাউজিংয়ের একটি ফাঁকা প্লটের কাছে গিয়ে ঘুমন্ত সামিউলের নাক-মুখ চেপে শ্বাসরোধ করে। কয়েকবার ঝাঁকি দিয়ে উঠে ২/৩ মিনিটের মধ্যেই সামিউলের শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়ে। নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বেরিয়ে আসে। এরপর লাশ বস্তায় ভরে ওই স্থানে ফেলে দিয়ে বাক্কু চলে যায়। পরদিন সকালে সেখান থেকেই সামিউলের লাশ উদ্ধার করা হয়। সারারাত বৃষ্টিতে ভেজায় তার লাশ খুব ঠাণ্ডা ছিল। এ কারণে প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়, লাশটি ফ্রিজে রাখা হয়েছিল।

সংবাদ সম্মেলনে নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দেওয়ার শেষ পর্যায়ে পুলিশ কর্মকর্তা চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীরও অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন। তিনি কান্নাভেজা গলায় বলেন, মায়ের ভুলেই নিষ্পাপ শিশুটির এমন করুণ পরিণতি বরণ করতে হলো। এ সময় সেখানে উপস্থিত সামিউলের বাবা কেআর আজমকেও কাঁদতে দেখা যায়।

তিনি জানান, বাক্কুর প্রথম জবানবন্দিতে অনেক ভুল তথ্য ছিল। র‌্যাবের হাতে গ্রেফতারের পর সে আয়শাকে ফাঁসানোর জন্য বাসায় হত্যা করে ফ্রিজে লাশ রাখার গল্প সাজায়। আয়শা ছেলের হন্তারক হিসেবে পুলিশকে বাক্কুর নাম বলায় সে আয়শাকেও জড়ানোর চেষ্টা করে। এর আগে পত্রিকায় প্রকাশিত খবর পড়ে সে সামিউলকে হত্যার দায় স্বীকার করে দেওয়া জবানবন্দির ছক তৈরি করে বলে পুলিশকে জানায়।

পুলিশ জানায়, সামিউলকে বাসায় ঘুমন্ত অবস্থায় হত্যা করা হলে তার পায়ে জুতা ছিল কেন, বাসার ছোট ফ্রিজে শিশুটির লাশ ঢোকানো সম্ভব নয়_ এসব বিষয় থেকে তদন্ত সংশ্লিষ্টদের সন্দেহ হয়, বাক্কু জবানবন্দিতে মিথ্যা তথ্য দিয়েছে। পরে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে বাক্কু এসব স্বীকার করে।

সূত্র জানায়, তদন্তে হত্যাকাণ্ডে আয়শার সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ এখনও মেলেনি। হত্যার আগে-পরে আয়শার সঙ্গে বাক্কুর বহুবার মোবাইল ফোনে কথা হয়েছে। তবে সে অপহরণ ও হত্যার বিষয়টি তাকে জানায়নি। তারপরও বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। উপযুক্ত প্রমাণ পেলে আয়শার বিরুদ্ধে হত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ আনা হবে। একই মামলায় গ্রেফতার বাক্কুর দ্বিতীয় স্ত্রী নাদিরা জামান সাথী ও ভাই নুরুজ্জামান নুরুর সংশ্লিষ্টতাও পাওয়া যায়নি।

ব্যবসায়ী কে আর আজম ও আয়শা হুমায়রা দম্পতির একমাত্র সন্তান সামিউল (৬) গত ২২ জুন বাসার সামনে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। পরে ২৪ জুন সকালে বাসার অল্প দূরে একটি ফাঁকা প্লটে তার বস্তাবন্দি লাশ পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে শিশুটির বাবার দায়ের করা মামলায় ওইদিনই মা আয়শাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। একই মামলায় এ পর্যন্ত আরিফ, তার ভাই নুরুজ্জামান নুরু ও স্ত্রী সাথীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

[ সূত্রঃ আমার ব্লগ, জুলাই ০৯, ২০১০ ]

এ সম্পর্কিত একটি ভিডিও দেখুন যেখানে অভিনয় করে দেখানো হয়েছে ঘটনপ্রবাহ। উপরের ছবিটি এই অভিনীত ভিডিও থেকে নেয়া

https://www.youtube.com/watch?v=cEzzg8NwVHo



মন্তব্য চালু নেই