অবসান হচ্ছে ৬৮ বছরের প্রতীক্ষার, মুক্তির আনন্দ

অবশেষে অবসান ঘটছে দীর্ঘ ৬৮ বছরের বন্দী জীবনের। ছিটমহল নামের অভিশপ্ত শব্দটি উঠে যাচ্ছে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত থেকে। ১ আগস্ট শনিবার প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ১১১টি ও ভারতের অভ্যন্তরে ৫১টি ছিটমহল বিনিময় হবে। যুগ যুগ ধরে অপেক্ষার সেই মুহূর্তটি বরণ করার জন্য আনন্দে মাতোয়ারা ছিটমহলবাসী। শুক্রবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে তাদের বিজয়ানন্দ। রাতভর চলবে বাঁধভাঙা আনন্দের এই উচ্ছ্বাস।

১৯৪৭ সালের দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ভারত-পাকিস্তান ভাগ হওয়ার পর থেকে বঞ্চিত থাকে ছিটমহলের অধিবাসীরা। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরও সমস্যাটি থেকে যায়। মুজিব-ইন্দিরার স্থলসীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের ফলে ৬৮ বছরের শোষন-বঞ্চনার ইতিহাসের অবসান ঘটতে যাচ্ছে ছিটমহলবাসীর। তাই দিনটিকে দেখছে তারা অন্ধকার থেকে আলোতে ফিরে আসার দিন হিসেবে।

ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির বাংলাদেশ অংশের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা ঢাকাটাইমসকে জানান, শুক্রবার মধ্যরাতে দুই দেশের সব ছিটমহলগুলোতে মুসলিম বাড়িগুলোতে ৬৮টি করে মোমবাতি ও হিন্দু বাড়িগুলোতে ৬৮টি করে প্রদীপ জ্বালানো হবে। এছাড়া ছিটমহলের প্রতিটি অন্ধকার সড়কে মশাল জ্বালিয়ে আলোকিত করা হবে।

তিনি আরো জানান, ছিটমহল বিনিময়ের পরপরই একযোগে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উড়ানো হবে।

সমন্বয় কমিটির বাংলাদেশ অংশের সভাপতি ময়নুল হক বলেন, এদিন ছিটমহলবাসীর উল্লাস আর উচ্ছ্বাস প্রকাশের দিন। স্থানীয়রা দিনব্যাপী বিভিন্ন খেলাধুলা, গান-বাজনা, খণ্ড-খণ্ড নাটকসহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি পটকা ফোটানো ও আতশবাজির আয়োজন করেছে।

এ ছাড়া জুমার নামাজের পর ছিটমহলের মসজিদে-মসজিদে বিশেষ মোনাজাত ও মন্দিরে-মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির ভারত অংশের সভাপতি দীপ্তিমান সেনগুপ্ত বলেন, দীর্ঘ ৬৮ বছরের পুঞ্জীভূত কষ্ট ও নাগরিকত্ব জীবনের যন্ত্রণার অবসানের প্রতীক হিসেবে দুই দেশের ছিটমহলবাসী অভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে। এ দিনটি হবে ছিটমহলবাসীর জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ দিন ও উৎসবের রাত।

ছিটমহল বিনিময় সম্পন্ন হলে প্রতিবছরই দিনটিকে স্মরণ রাখার জন্য ছিটমহলবাসীরা নানা কর্মসূচি পালন করবেন বলে সমন্বয় কমিটি জানিয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই