অবসরপ্রাপ্ত পুলিশের বাড়িতে ‘ধর্ষিতা’ শিশুর মৃত্যু

ঝালকাঠিতে গৃহশ্রমিক হিসেবে কাজ করতে যাওয়া ১২ বছর বয়সী একটি শিশু ধর্ষণ ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে হাসপাতালে মারা গেছে। বৃহস্পতিবার বরিশালের শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির দুই দিন পর শনিবার সকালে মারা যায় শিশুটি।

শনিবার সকালে হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে শিশুটির মৃত্যু হয়। বিকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন হাসপাতালের পরিচালক এস এম সিরাজুল হক।

এক অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যের বাড়িতে কাজ করতে পাঠানো হয়েছিল শিশুটিকে। নির্যাতনের পর ওই ব্যক্তি ফোন করেন শিশুটির বাবাকে, বলেন তাকে নিয়ে যেতে। কিন্তু তার বাবা আনেনি। পরে একজনকে দিয়ে শিশুটিকে বাড়ি পাঠানো হয় এবং তার অবস্থা খারাপ দেখে স্থানীয় চেয়ারম্যান তাকে বরিশাল-শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।

শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক সিরাজুল হক জানান, ধর্ষণের বিষয়টি প্রথমে গোপন রেখে মেডিসিনি ওয়ার্ডে ৯ মার্চ ভর্তি করা হয়। এরপর সেখানের চিকিৎসকরা শিশুটির অবস্থা বুঝতে পেরে সার্জারি হয়ে গাইনি ওয়ার্ডে পাঠান। কিন্তু শিশুটির শারীরিক অবস্থা এতই খারাপ ছিল যে, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়।

শিশুটির বাবা জানান, পাঁচ মাস আগে তার মেয়েকে ঝালকাঠি সদর উপজেলার বালিগোনা এলাকায় অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য মন্নানের বাসায় কাজে দেন। মান্নান কয়েক দিন আগে তাকে ফোনে জানান, তার মেয়ে খুব অসুস্থ এবং বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেন।

৮ মার্চ লোক দিয়ে তার মেয়েকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন মান্নান। সেখানে আনার পর স্থানীয় চেয়ারম্যানকে মেয়ের শারীরিক অবস্থার কথা জানালে তিনি থানায় পাঠান। পুলিশ মেয়ের শারিরীক অবস্থা দেখে ওইদিনই বানারীপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখান থেকে বরিশাল হাসপাতালে পাঠানো হয়।

শিশুটির বাবা বলেন, ‘আমি আমার মেয়ের মৃত্যুর জন্য দায়ীদের বিচার চাই।’

স্থানীয় বাসিন্দা তাসলিমা বেগম বলেন, ‘বাকপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যানকে বিষয়টি জানালে তিনি মেয়েটিকে নিয়ে পুলিশের কাছে যেতে বলেন। পুলিশ মেয়েটির শারিরীক অবস্থা খারাপ দেখে হাসপাতালে ভর্তি করায় এবং পরে হাসপাতালের নিয়ে আসি।’

হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার আবুল কালাম জানান, মেয়েটির মৃতদেহ সূরতহাল শেষে বেলা আড়াইটায় ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

বানারীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘যখন মেয়েটি আমাদের কাছে এসেছিল তখন সে কথাই বলতে পারেনি। তার অবস্থা খারাপ দেখে প্রথমে তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করি। ঘটনাস্থল ঝালকাঠিতে হওয়ায় বরিশাল হাসপাতালের ওসিসির মাধ্যমে ঝালকাঠি থানায় এর আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’



মন্তব্য চালু নেই