অবশেষে জিপিএ-৫ পেল সেই ফারিয়া, অভিযুক্ত শিক্ষককে বদলি

অবশেষে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে নড়াইল সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রী ফারিয়া ইসলাম। এদিকে, নড়াইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিষয়ের অভিযুক্ত শিক্ষক ফসিয়ার রহমানকে বাগেরহাটে বদলি করা হয়েছে।

ফারিয়ার মা সাবিনা আক্তার শিল্পী বলেন, অবেশেষে আমার মেয়ের ফলাফল পেয়েছি। ফারিয়া জিপিএ-৫ পেয়েছে। তবে, গোল্ডেন পেলে খুশি হতাম। স্কুলশিক্ষকা সাবিনা জানান, রোববার (২৮ জুন) বিকেলে তার মেয়ের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। ফারিয়া অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলে, আমি খুশি হয়েছি। তবে, গোল্ডেন এ প্লাস পেলে আরো ভালো লাগত।

এদিকে, অভিযুক্ত শিক্ষক ফসিয়ার রহমানকে বাগেরহাটের একটি সরকারি বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়েছে। নড়াইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মনিরা সুলতানা জানান, ফসিয়ার রহমানকে ‘জনস্বার্থে বদলি’ করা হয়েছে। বদলির আদেশে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ‘জনস্বার্থে বদলি’র কথা উল্লেখ করেছেন।

নড়াইল সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক ফিরোজ কিবরিয়া বলেন, পরিকল্পিতভাবে ফরিয়ার ফলাফল খারাপ করা হয়েছিল। তার ফলাফলে খুশি হয়েছি। ফারিয়ার বাবা জহিরুল ইসলাম জানান, ফারিয়া পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তিসহ প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত কখনো প্রথম, কখনো দ্বিতীয়স্থান অর্জন করে এসেছে।

প্রসঙ্গত, শিক্ষকের প্রেম প্রস্তাব প্রত্যাখানসহ উত্যক্তের প্রতিবাদ করায় নড়াইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক ফসিয়ার রহমান এসএসসি পরীক্ষায় ফারিয়ার পদার্থ বিজ্ঞান বিষয়ে জমাকৃত খাতা ও বহুনির্বাচনীর উত্তরপত্র পরিবর্তন করে বিকৃত করে জমা দেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ কারণে মেধাবী ফারিয়া সাতটি বিষয়ে এপ্লাস পেলেও পদার্থ বিজ্ঞান বিষয়ে অকৃতকার্য হয়। এছাড়াও পাঁচটি ব্যবহারিক পরীক্ষার ফল কম্পিউটার কম্পোজ করে ফসিয়ার রহমান বোর্ডে পাঠানোর দায়িত্বপ্রাপ্তির সুযোগে ফারিয়াকে ব্যবহারিকেও ১৫ নম্বর করে দেন। অথচ নড়াইল সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের সব পরীক্ষার্থীকে ২৫ নম্বর করে দেয়া হয়।

ভূক্তভোগী শিক্ষার্থী ফারিয়া ও তার অভিভাবকেরা জানান, প্রায় তিন বছর আগে শিক্ষক ফসিয়ার রহমান নড়াইল সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে কর্মরত থাকাকালে প্রায়ই ফারিয়াকে উত্যক্ত করতো। বিষয়টি জানাজানি হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ শিক্ষক ফসিয়ারকে নড়াইল থেকে মেহেরপুরের একটি বিদ্যালয়ে বদলি করে।

পরে নড়াইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগদান করেন ফসিয়ার রহমান। নড়াইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ফারিয়া ইসলামের এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র হওয়ায় এবং ফসিয়ার রহমান পরীক্ষা কমিটির সদস্য থাকায় অপকৌশলে ফারিয়াকে পদার্থ বিজ্ঞান বিষয়ের উত্তরপত্র বিকৃতভাবে জমা দেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক ফসিয়ার রহমানের শাস্তির দাবিতে এবং ফারিয়ার পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নের দাবিতে সচেতন নড়াইলবাসীর উদ্যোগে কয়েকদফায় নড়াইলে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। গঠিত হয় দু’টি তদন্ত কমিটি। শিক্ষামন্ত্রীর সাথেও দেখা করেন ফারিয়া ও তার পরিবার।

এদিকে, অভিযুক্ত শিক্ষককে বদলির ঘটনায় ফেসবুকে অনেকেই মন্তব্য করেছেন, শুধু বদলি নয়, কঠোর শাস্তির আশা করছি।

আরো পড়ুন :

প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এসএসসিতে ফেল করলো মেধাবী ফারিয়া!



মন্তব্য চালু নেই