অবশেষে ঋতুকালীন যন্ত্রণার কারণ আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের

মেয়েদের ঋতুস্রাব নিয়ে যুগান্তকারী এক গবেষণা থেকে বিজ্ঞানীরা শেষ পর্যন্ত মাসিকের সময় তীব্র যন্ত্রণার কারণ আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছেন। এতে দেখা যায়, ’সি-রিঅ্যাকটিভ প্রোটিন’ (সিআরপি) নামের এক ধরনের জৈবপদার্থের কারণেই মাসিকপূর্ব সময়ে মেয়েদের তীব্র প্রদাহের সৃষ্টি হয়।

এই আবিষ্কারের ফলে এখন মাসিককালীন প্রদাহ নিরাময়কারী ওষুধ প্রদান সহজ হবে। প্রদাহ-বিরোধী চিকিৎসা দিয়ে এখন থেকে মেয়েদের ঋতুকালীন ব্যথা উপশম সম্ভব হবে।

৩ হাজার ৩০২ জন নারীর ওপর জরিপ করে তৈরি গবেষণাটি মার্কিন চিকিৎসা গবেষণা সাময়িকী ‘জার্নাল অব ওম্যানস হেলথে’ প্রকাশিত হয়েছে। এতে দেখা গেছে, সিআরপি’র উপস্থিতির কারণেই মেয়েদের মাসিকপূর্ব প্রদাহ সৃষ্টি হয়। এর আগে হৃদরোগের সঙ্গে সিআরপি’র সম্পর্ক বিষয়ক এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রদাহের সঙ্গে সিআরপি’র একটা সম্পর্ক আছে। তবে এজন্য একমাত্র সিআরপি-ই যে দায়ী তা তখন নির্ণয় করা যায়নি।

গবেষকদের মতে, মাসিকের সময়ে মেয়েদের পেটের ব্যথা, পিঠের ব্যথা, ক্ষুধা বেড়ে যাওয়া, ওজন বেড়ে যাওয়া, মোটা হয়ে যাওয়া এবং স্তনের ব্যথা- এসব লক্ষণের সঙ্গে সিআরপি’র অবিচ্ছেদ্য একটি সম্পর্ক আছে। সিআরপি’র মাত্র বেড়ে গেলে এগুলো বেড়ে যায়। তবে এর সঙ্গে মাথাব্যথার কোনো সম্পর্ক নেই।

মাসিকপূর্ব প্রতিটি লক্ষণের সঙ্গেই সিআরপি’র আলাদাভাবে সম্পর্কিত। বিষয়টিকে জটিল আখ্যা দিয়ে এ নিয়ে আরো লম্বা গবেষণা দরকার বলেও অভিমত দেন গবেষকরা।

গবেষণায় পরামর্শ দেয়া হয়েছে, প্রদাহ বাড়তে পারে এমন কাজ যেন নারীরা এড়িয়ে চলে। এছাড়া মাসিকের সময়ের ব্যথা উপশমে নারীদের প্রদাহ-বিরোধী ওষুধ ব্যবহার করার জন্য বলা হয়েছে।

জার্নাল অব ওম্যানস হেলথ’র সম্পাদক ডা. সুসান কর্নস্টেইন বলেন, ‘বেশিরভাগ নারীর মধ্যেই মাসিকপূর্ব সময়ে কিছু না কিছু লক্ষণ দেখা যায়। এ বিষয়ে নতুন এই গবেষণা ঋতুস্রাবকালীন ব্যথা উপশমের চিকিৎসার নতুন দ্বার খুলে দিল।’

দীর্ঘদিন ধরে নারীদের এ বিষয়ে সমস্যা সত্ত্বেও ব্যাপারটি সামাজিকভাবে রাখঢাক করে চলা হয় বলে এ নিয়ে বৈজ্ঞানিক গবেষণা হয়েছে খুবই কম। মাসিক হয় এমন ৮০ শতাংশ নারীই ঋতুস্রাবপূর্ব বিভিন্ন প্রদাহে ভুগে থাকেন।



মন্তব্য চালু নেই