অপারেশনের ছবি ফেসবুকে, বিমর্ষ রোগী

এমন একটা দিন দেখতে হতে পারে, তিনি কল্পনাও করেননি।। শরীরে কাটাছেঁড়া হয়েছে ছ-মাস হল। বুকের মধ্যে বাসা বাঁধা।টিউমারের অস্ত্রোপচার করিয়ে সুস্থ মহম্মদ ফয়জল হঠাত্‍‌ করেই ফের বিমর্ষ হয়ে পড়েন।না, টিউমার যে মারণ কোনও অসুখে পরিণত হয়েছে, এমনটা নয়। ফয়জলকে বিমর্ষ করে তুলেছে ফেসবুক। নিজের চোখকে বিশ্বাস হচ্ছিল না তাঁর। অস্ত্রোপচারের ছবি ফেসবুকে এল কীভাবে! ডাক্তাররা ছাড়া অপারেশন থিয়েটারে কেউ থাকার কথা নয়। তাঁর সন্দেহই যে ঠিক, তা বুঝতে সময় লাগেনি। যে ডাক্তার হৃদপিণ্ডের মধ্যে গজিয়ে ওঠা টিউমারটি অস্ত্রোপচার করে বাদ দিয়েছেন, ছবি আপলোড করা তাঁরই কীর্তি। মহম্মদ ফয়জলের আপত্তিতে যদিও সেই ছবি পরে মুছে ফেলতে বাধ্য হয়েছেন ওই শল্যচিকিত্‍‌সক।ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছেন ব্যক্তিগতভাবে।

ফয়জলের বিপর্যস্ত বোধ করার কারণ, শুধু তাঁর অস্ত্রোপচারের পোস্ট করা ছবি নয়। সেই ছবির নীচে একের পর এক মন্তব্য। তাতে কেউ কেউ মজাও করেছেন ফয়জলের সেসময়কার শারীরিক অবস্থা দেখে। দ্রুত ভাইরালও হয়ে পড়ে। যদিও বাঁচোয়া, সেই শল্যচিকিত্‍‌সক ফয়জলের নাম কোথাও উল্লেখ করেননি।ছবির নীচে দিয়েছেন ১৫০ শব্দের ক্যাপশন। এই ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে রোগীর গোপনীয়তা নিয়ে। সেইসঙ্গে প্রশ্নের মুখে ডাক্তাররাও।এখন অপারেশন থিয়েটারগুলোয় নানা রকম গ্যাজেটস ব্যবহার করা হচ্ছে। তারই সুযোগ নিচ্ছেন মেডিক্যাল প্রফেশনালরা।

জেনে বুঝেই তাঁরা ছবি পোস্ট করে আইন ভাঙছেন। তাতে রোগীদের গোপনীয়তা বজায় থাকছে না। ঘটনার কথা শুনে ভ্রুকুঞ্চিত হয়ে যায় ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের। কোনও ডাক্তার অস্ত্রোপচারের ছবি পোস্ট করছেন, তা অবাক করেছে অ্যাসোসিয়েশনকেও। অ্যাসোসিয়েশনের কো-অর্ডিনেটর জে এ জয়ালাল স্বীকার করেছেন, রোগীর অনুমতি ছাড়াই এ ধরনের ছবি সোশ্যালসাইটে পোস্ট করা হচ্ছে। নিজেদের ঢাক পেটাতেই কিছু ডাক্তার ইচ্ছাকৃতভাবে এমন কাজ করছেন বলে অভিযোগ জয়নালের।



মন্তব্য চালু নেই