অপরাধীদের স্বপক্ষেই বেশিরভাগ রক্ষাকবচ : নুরুল হুদা

সিলেটে ছাত্রলীগের এক নেতার হামলায় আহত কলেজ ছাত্রী খাদিজা বেগম নার্গিসের অবস্থা সঙ্কটাপন্ন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। প্রেম নিবেদনে ব্যর্থ হয়ে সোমবার বিকালে এমসি কলেজ প্রাঙ্গণে এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে তাকে আহত করা হয়। ইতোমধ্যেই ঘটনার ভিডিও ফেসবুকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। সম্প্রতি ঢাকায় এবং মাদারিপুরে দু’জন স্কুল ছাত্রী উত্যক্তকারীদের নৃশংস হামলায় নিহত হয়। সে ঘটনাগুলোও ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। কিন্তু এ ধরনের ঘটনাগুলোতে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা যাচ্ছে না কেন?

এইসব নৃশংস ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা যাচ্ছে না কেনম, সে বিষয়ে বিবিসি বাংলার সাথে কথা বলেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক নুরুল হুদা। তিনি বলেন, এইঘটনাগুলো দুঃখজনক ও হৃদয় বিদারক ঘটনা। তবে রাজনৈতিক তকমা দিয়ে দুবৃত্তকে চিহ্নিত করা উচিত না। এটা হয়তো কারো রাজনীতিতে থাকা প্রচ্ছন্নভাবে একটা প্রভাব ফেলতে পারে। বিচার করার আগে দ্রুত তদন্ত শেষ করতে হবে। এক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছা থাকা দরকার। এখন জনগণের মধ্যে সচেতনতা এসেছে এবং তারা এই ধরনের ঘটনার প্রতিবাদ করছে।

এই ঘটনায় ভিডিও ফুটেজ আছে, যে হত্যাকারী তাকে চিহ্নিত করা গেছে এবং সে এখন পুলিশ হেফাজতে আছে। এই ধরনের ঘটনাগুলোতে অনেক সময় দেখা যায় দ্রুত তদন্ত হয় না সে সম্পর্কে নুরুল হুদা বলেন, এই ধরনের তথ্য-উপাত্ত আমার কাছে নেই। তবে আমি এইটুকু বলব যে এখানে জনগণ এবং পুলিশের সম্মিলিত প্রয়াস কাজে লাগানো উচিত। তবে আমাদের দেশে দ্রুত বিচারিক প্রক্রিয়ায় একটা বাধা আছে। সেটা আইনগতভাবে আমাদের লিগ্যাল সিস্টেমে যিনি অভিযুক্ত তার স্বপক্ষেই বেশিরভাগ রক্ষা কবচ আছে। আমি সেটা নিয়ে কোন প্রশ্ন করব না। কিন্তু এটা বুঝতে হবে যিনি অভিযোগকারী তার পক্ষে আইন ততটা সহায়ক না, যতটা অভিযুক্তের পক্ষে সহায়ক। তার পেছনে যুক্তিসঙ্গত কারণ অবশ্যই আছে। কিন্তু আমি মনে করি দ্রুত তদন্ত করে, দ্রুত বিচার শেষ করলে তার একটা প্রতিক্রিয়া অবশ্যই হবে।

যখন এ ধরণের ঘটনা ঘটে, তা নিয়ে যখন হৈচৈ হয় তখন পুলিশ বা কর্তৃপক্ষকে একরকম তৎপর দেখা যায়। কিন্তু আলাচনা থেমে গেলে অনেক সময় দেখা যায় কর্তৃপক্ষের তৎপরতা ঝিমিয়ে যায় এর কারণ সম্পর্কে নুরুল হুদা বলেন, সেটা যদি আমাদের সমাজ তথা সমাজ ব্যবস্থার দৃষ্টিতে বা মনস্তাত্ত্বিক দৃষ্টিতে দেখা যায় তাহলে বলা যায় এক ধরণের নিষ্ক্রিয়তা এসেছে। কিন্তু সেটা বাঞ্ছনীয় না। তার জন্য সবসময় সর্বোচ্চ সজাগ থাকতে হবে। সেটা সমাজকে যারা নিয়ন্ত্রণ করেন, কতৃত্ব যাদের কাছে এবং যেসব কারেকটিভ প্রতিষ্ঠান আছে। এগুলোর সম্মিলিত প্রয়াস না থাকলে সামাজিক নিয়ন্ত্রণে শিথিলতা দেখা দিবে। যার কারণে সম্মিলিত প্রয়াস থাকতে হবে।

সূত্র: বিবিসি বাংলা।



মন্তব্য চালু নেই