অন্ধের মতো গুলি ছুড়ছিল তিনজন

প্রতি শুক্রবারেই রাজধানী প্যারিসের বাতাক্লান নাইটক্লাবে ভীড় হয়। তবে গতকাল রাতে ভীড়ের মাত্রাটা ছিল একটু বেশি। কারণ রাতে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার হেভি মেটাল ব্যান্ড ইগলস অব ডেথ মেটালের কনসার্ট ছিল। এক হাজারের বেশি ভক্ত নাইটক্লাবে জড়ো হয়েছিলেন।

স্টেজে উঠে ইতিমধ্যে এক ঘন্টা গান পরিবেশন করেছে ইগলস অব ডেথ মেটাল। পুরো হলরুমে বাদ্যযন্ত্রের প্রচণ্ড আওয়াজ। হঠাৎ করে এই আওয়াজ ছাপিয়ে শোনা গেল গুলির আওয়াজ।

হামলায় বেঁচে যাওয়া প্রত্যক্ষদর্শী ইউরোপ ওয়ান রেডিওর সাংবাদিক জুলিয়েন পিয়ার্স বলেন ‘মুখোশবিহীন দুই অথবা তিনজন মানুষ হাতে কলাশনিকভের মতো স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে ভীড়ের মধ্যে অন্ধের মতো গুলি চালাতে শুরু করে।….১০ থেকে ১৫ মিনিট এটি স্থায়ী হয়েছিল। এটা ছিল প্রচণ্ড ভয়ঙ্কর এবং পুরো হলরুমজুড়ে আতঙ্কের ঢেউ খেলছিল।

তিনি বলেন, ‘ প্রত্যেকেই বিভিন্ন দিক থেকে দৌড়ে স্টেজের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। সবাই উর্দ্ধশ্বাসে দৌড় দিচ্ছিল এবং আমি তাদের পায়ের নিচে পড়ে যাই। বন্দুকধারীরা কমপক্ষে তিনবার রাইফেলে গুলি ভর্তি করে। তাদের কোনো মুখোশ ছিল না। তারা কী করছে সেটি তারা জানতো। তারা ছিল একেবারেই তরুণ।’

পিয়ার্স বলেন, ‘ হামলার সময় বন্দুকধারীরা একটি শব্দও বলেনি।’

তবে ঘটনার অন্য প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হামলাকারীরা ওই সময় ‘ এটা সিরিয়ার জন্য’ বলে চিৎকার করছিল।

এক পর্যায়ে বোমার বিস্ফোরণ ঘটায় তিন আত্মঘাতী হামলাকারী। মুহূর্তের মধ্যে পুরো হলরুম যেন নরকে পরিণত হয়। মেঝে জুড়ে শুধু রক্ত আর মৃতদেহ। সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুযা্য়ী, বাতাক্লাইন নাইটক্লাবে নিহতের সংখ্যা ১২০ জন ছাড়িয়েছে।

শুক্রবার ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসসহ ও এর আশপাশের ছয় স্থানে সন্ত্রাসী হামলায় কমপক্ষে ১৫৩ জন নিহত হয়েছেন। এসব হামলায় আহত হয়েছেন আরো শতাধিক। এ হামলার পর ফ্রান্সে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ। দেশটির সব সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

সূত্র: গার্ডিয়ান



মন্তব্য চালু নেই