অনেক উঁচুতে মৃত্যুর মুখে

আধুনিক সময়ের শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম নিউইয়র্ক। যুক্তরাষ্ট্রবাসী কিছুটা গর্ব করেই এই শহরকে শিল্প-সাহিত্য আর নগরসভ্যতার আতুড়ঘরও বলে থাকেন। কিন্তু যে দেশের অর্থনীতি অন্য দেশ থেকে লুট করে আনা সম্পদের ওপর দাড়িয়ে আছে, তাদের পক্ষে কিভাবে শিল্প-সাহিত্যের অগ্রগামী হওয়া যায় সেটা ভিন্ন আলাপ। কিন্তু উন্নত নগরব্যবস্থার ধারক হিসেবে নিউইয়র্ক শহর অনায়াসে পৃথিবীর অন্যান্য আধুনিক শহরের চেয়ে এগিয়ে। বিশ শতকের শুরুর দিকেই নিউইয়র্কে আকাশচুম্বী দালান উঠতে শুরু করে। বিভিন্ন রাজ্য থেকে আসা অধিবাসীদের এবং বিশ্বের অন্যতম বাণিজ্যিক নগরী হিসেবে পরিচিতি পেতে সেসময় নিউইয়র্কের জন্য ওই উন্নয়ন দরকার ছিল। কিন্তু প্রশ্ন হলো, তখন তো আর বর্তমান সময়ের মতো উন্নত প্রযুক্তি ছিল না, তাহলে কি উপায়ে তারা এই বিশালসব দালান তৈরি করলো।

১৯৩২ সালের দিকে পার্শ্ববর্তী স্কটল্যান্ডসহ বেশ কয়েকটি দেশে সহিংস পরিস্থিতি বিরাজ করায় যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিনিয়ত অভিবাসীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। যেহেতু নতুন আমেরিকা পুরোটাই বিভিন্ন জাতির মানুষদের সমন্বয়ে গঠিত তাই এই অভিবাসীদের বিতারন করা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অতটা সহজ ছিল না। তবে সেসময় এই বিপুল জনগোষ্ঠিকে আলাদা করে না দিয়ে বৃহৎ কর্মযজ্ঞের ভেতর দিয়ে অর্থনীতিতে যুক্ত করে দেশটি। বিভিন্ন দেশ থেকে আসার এই অভিবাসীরাই মূলত বিশাল সব অট্টালিকা তৈরির নেপথ্যের কলাকুশলী। দালানের ডিজাইন হয়তো যুক্তরাষ্ট্রের কোনো বিখ্যাত প্রকৌশলীই করেছিল কিন্তু তা বাস্তবে রূপ নিয়েছিল ওই অভিবাসী শ্রমিকরাই।

তৎকালীন সময়ের একজন বিখ্যাত আলোকচিত্রী ছিলেন চার্লস সি. ইবেটস। আকাশচুম্বী দালানে ছেয়ে যাওয়া নিউইয়র্কের বেশকিছু ছবি তখন তিনি তুলেছিলেন নিজের মেধা কাজে লাগিয়ে। অবশ্যই তিনি সাহসীদের মধ্যে একজন ছিলেন। তা না হলে ‘লাঞ্চ এ্যাটপ এ স্কাইস্ক্র্যাপার’ শিরোনামের সেই দুর্দান্ত ছবিটি তুলতে পারতেন না। তার সেই বিখ্যাত ছবিতে দেখা যায়, মাটি থেকে সাড়ে আটশ ফুট উঁচুতে কর্তব্যরত শ্রমিকদের মাছে খাবার পরিবেশন করছেন একজন লোক এবং শ্রমিকরা সেই খাবার খাচ্ছেন। অবশ্য চার্লস এরকম অনেক ছবিই তুলেছেন, যা বর্তমানে গেটি ইমেজ নামের একটি এজেন্সির কাছে সংরক্ষিত আছে। যদিও যে কেউ চাইলেই এই ছবি দেখতে পারেন না। একটি নির্দিষ্ট অর্থ দিলেই কেবল এই দুর্দান্ত ছবিগুলো দেখতে পাওয়া যায়। যদিও, চার্লস বেঁচে থাকলে তার ছবির এইরকম চূড়ান্ত বাণিজ্যিকীকরণ দেখতে ভালোবাসতেন কিনা তা বলা মুশকিল। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ডেইলি মেইলের সৌজন্যে বিশ্ববাসীর চার্লসের তোলা কিছু ছবি দেখার সুযোগ হয়েছে। বাংলামেইলের পাঠকদের জন্য সেই ছবিগুলো তুলে ধরা হলো।
BRIDGE LADY TOP VACUAM VIABRANT



মন্তব্য চালু নেই