সাত মন্ত্রী-এমপির অবৈধ সম্পদ

অনুসন্ধান শেষ, প্রতিবেদন জমার প্রক্রিয়া শুরু

বর্তমান ও সাবেক সাত মন্ত্রী-এমপির বিরুদ্ধে অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জনের অনুসন্ধান শেষ করেছে দুর্নীত দমন কমিশন (দুদক)। শুরু হয়েছে অনুসন্ধনের প্রতিবেদন জমার প্রক্রিয়া। চলতি সপ্তাহেই তাদের প্রতিবেদন কমিশনে জমা হতে পারে বলে দুদক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

সূত্র জানায়, সরকারদলীয় সাবেক ও বর্তমান মন্ত্রী-এমপিদের অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জন অনুসন্ধানে শেষে তাদের সবার বিরুদ্ধেই অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের সত্যতা পেয়েছে দুদক।

দুদক সূত্র জানায়, অনুসন্ধান কর্মকর্তা ও দুদকের উপপরিচালক খায়রুল হুদা ইতিমধ্যে সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর রহমান তালুকদারের বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ করে প্রতিবেদন তৈরি করেছেন।

সূত্র জানায়, অভিযুক্ত ছয়জনের হলফনামায় সম্পদের রহস্যজনক বৃদ্ধির কারণ খতিয়ে দেখতে নিযুক্ত ছয় অনুসন্ধান কর্মকর্তা রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানি, সংশ্লিষ্ট জেলা রেজিস্ট্রার অফিস, এনবিআর, বিআরটিএ, রাজউক, পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি, রিহ্যাব, ব্যাংক-বীমাসহ অন্যান্য অফিসে অনুসন্ধান করে প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহ করে সম্পদের হিসাব নির্ণয় করেছেন। পাশাপাশি তাদের নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় সরেজমিন পরিদর্শন করেন অনুসন্ধান কর্মকর্তারা। প্রাথমিক পর্যায়ের অনুসন্ধানেই তাদের নামে-বেনামে বিপুল অবৈধ সম্পদের তথ্য-প্রমাণ মিলেছে।

তাদের সম্পদের চিত্র
সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আবদুল মান্নান খানের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করতে গিয়ে ১০৭ গুণ সম্পদ বৃদ্ধির তথ্য পেয়েছে দুদক। এবং প্রায় ১০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের সন্ধান পেয়েছে দুদক। দুদক তাকে একবার জিজ্ঞাসাবাদও করেছে।

সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হকের নামে প্রায় ১৬ কোটি টাকার সম্পদ পাওয়া গেছে। হলফনামার হিসাব অনুযায়ী গত পাঁচ বছরে রুহুল হক ও তার স্ত্রী ইলা হকের ব্যাংক ব্যালেন্স বেড়েছে ১৬৫ গুণ। সাবেক এ স্বাস্থ্য মন্ত্রীকে দুদক একবার জিজ্ঞাসাবাদ করে।

সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর রহমানের নামে প্রায় ১০ কোটি টাকার সম্পদের খোঁজ পেয়েছে দুদক। মহাজোট সরকারের পাঁচ বছরে তার জমির পরিমাণ বেড়েছে ১৪৩ গুণ। একইভাবে ব্যাংকে টাকা বেড়েছে ৫৮৬ গুণ। আর বার্ষিক আয় বেড়েছে ৭৯ গুণ। তাকেও একবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদিরও ৩৫১ গুণ সম্পদ বেড়েছে এবং নামে-বেনামে তার কোটি কোটি টাকার সম্পদ পাওয়া গেছে। তাকেও একবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

এনা প্রপার্টিজের কর্ণধার সংসদ সদস্য এনামুল হকের নামে দুই হাজার ১২০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুদক। তাকেও একবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়া হলফনামার সূত্র ধরে যাদের বিরুদ্ধে দুদক অনুসন্ধান করছে তারা হলেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হক, সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর রহমান, সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আবদুল মান্নান খান, এমপি আবদুর রহমান বদি, এমপি এনামুল হক, এমপি আসলামুল হক ও জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি এম এ জব্বার।



মন্তব্য চালু নেই