বিএনপির কাউন্সিল ভেন্যু

অনুমতি পাওয়ার পর বুঝল এখানে হবে না

বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলের তারিখ চূড়ান্ত হলেও এখনো চূড়ান্ত হয়নি ভেন্যু। তবে দলের তিনটি পছন্দের একটি অর্থাৎ সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ব্যবহারের জন্য অনুমতি পাওয়ার পর এখন দলটির মনে হচ্ছে সেখানে সম্মেলনের দুটি পর্ব করা সম্ভব হবে না।

জাতীয় কাউন্সিল আয়োজনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ব্যবহারের জন্য বিএনপির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের অনুমতি দেয় গণপূর্ত বিভাগ। তবে বিএনপির প্রথম পছন্দ বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র। এ কারণে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুমতি পেয়েও খুশি হতে পারছেন না দলের নীতিনির্ধারকরা।

কারণ দুই পর্বে অনুষ্ঠেয় কাউন্সিলের এক পর্ব উন্মুক্ত স্থানে করা গেলেও রুদ্ধদ্বার পর্বটির জন্য প্রয়োজন বড় হল। এই রুদ্ধদ্বার পর্বের গোপনীয়তার রক্ষার স্বার্থেই দ্বিতীয় পর্বটি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের খোলা মঞ্চে করা সম্ভব নয়। তাই কাউন্সিলের ভেন্যু নিয়ে বিকল্প ভাবা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

বিএনপির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পাশাপাশি বিএনপির পছন্দের অন্যতম ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তন ব্যবহারের অনুমতি চাওয়া হতে পারে, যাতে সোহরাওয়ার্দীতে প্রথম পর্ব শেষ করে রুদ্ধদ্বার পর্ব মিলনায়তনে করা যায়।

তবে দলের প্রথম পছন্দ বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র পাওয়ার জন্য জোর চেষ্টা চালানো হবে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। তারা বলছেন, সেখানে কাউন্সিল করার অনুমতি পেলে দুই পর্বই নিরাপদ ও সুশৃঙ্খলভাবে করা সম্ভব হবে।

এদিকে কাউন্সিলের জন্য তিনটি ভেন্যুর কথা উল্লেখ করে পুলিশের কাছে অনুমতি চাওয়া সঠিক হয়নি বলে মনে করছেন বিএনপির কেউ কেউ। কারণ কাউন্সিলের অনুষ্ঠানের জন্য এমন ভেন্যু দরকার, যেখানে দুই পর্ব শেষ করা যায়।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ব্যবহারের অনুমতি পাওয়ার পর বিএনপি মনে করছে, সরকার ইচ্ছা করেই এখানে অনুমতি দিয়েছে। উন্মুক্ত উদ্যানে কাউন্সিল করতে গেলে পুরো এলাকা একটি জনসভায় পরিণত হবে। এতে সেখানে রক্ষা হবে না কাউন্সিলের পরিবেশ। তা ছাড়া প্যান্ডেল নির্মাণসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনায় প্রচুর অর্থ ব্যয় হবে, যা সংকুলান করার সামর্থ্য এ মুহূর্তে দলের নেই। উন্মুক্ত স্থানে কাউন্সিলের শৃঙ্খলা রক্ষা করাও কঠিন হবে।

প্রসঙ্গত, আগামী ১৯ মার্চ জাতীয় কাউন্সিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বর্তমানে রাজনৈতিক মাঠে কোণঠাসা বিএনপি। ইতিমধ্যে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে ভেন্যু হিসেবে চেয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছে আবেদন করেছে দলটি।

বিএনপির চেয়ারপারসনের একজন উপদেষ্টা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “তিনটি জায়গা চাওয়া মনে হয় ঠিক হয়নি। সরকার সেই সুযোগটিই নিয়েছে। সরকার যেহেতু চায় না বিএনপি সুষ্ঠুভাবে কাউন্সিল করুক, তাই প্রথম পছন্দ রেখে তৃতীয় পছন্দ সোহরাওয়ার্দীতে অনুমতি দেয়া হয়েছে। এটা সরকারের চালাকি। কিন্তু কাউন্সিলের দুই পর্ব খোলা মাঠে করা যাবে না। সে ক্ষেত্রে বিকল্প ভাবতে হতে পারে।”

যুবদলের সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, “সোহরাওয়ার্দীতে একটা পর্ব করা গেলেও দ্বিতীয় পর্ব করা তো অসম্ভব। তবে ওটার সঙ্গে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন হলে সম্ভব। কিন্তু সেটি পাওয়া যাবে কি না তা নিশ্চিত না। কারণ সরকার চাইলে অনেকভাবে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। এই যেমন প্রথম পছন্দ বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র থাকার পরও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুমতি দিয়েছে গণপূর্ত বিভাগ। তাও সেখানে পুলিশের অনুমতির শর্ত দেয়া হয়েছে।”

তিনটি ভেন্যুর বিকল্প চাওয়া হতে পারে কি না এমন প্রশ্নে আলাল বলেন, “যেহেতু আমরা কাউন্সিলের প্রস্তুতি নিয়েছি, সেটা ঢাকাঢোল পিটিয়ে হোক অন্যভাবে হোক, করতে হবে। সরকার পছন্দমতো ভেন্যু ব্যবহারের সুযোগ না দিলে অন্য চিন্তা করতে হবে আমাদের। সে ক্ষেত্রে বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারসহ অন্য বিকল্পও ভাবা হচ্ছে।” এই সপ্তাহের মধ্যে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে ভেন্যু চূড়ান্ত করা হতে পারে বলে আশা করেন তিনি।ঢাকাটাইমস



মন্তব্য চালু নেই