অনাগত সন্তানের মুখ দেখে যেতে পারলেন না এসি রবিউল

গুলশানের আর্টিসান রেস্তোরাঁয় গোলাগুলিতে পুলিশের সহকারী কমিশনার রবিউল ইসলাম আহত হয়েছেন এমন খবর পেয়ে তার আত্মীয়স্বজন সাভার থেকে রওনা দেন। তাদের মধ্যে ছিলেন রবিউলের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ও সাত বছরের ছেলে। পথিমধ্যে তাঁরা জানতে পারেন এসি রবিউল ইসলাম মারা গেছেন।

এ দিকে এ ঘটনায় দুর্বৃত্তদের গুলি ও বোমায় বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাহউদ্দিনও নিহত হয়েছেন।

রাত পৌনে নয়টার দিকে গুলশানের আর্টিজান রেস্তোরাঁয় ১০ জন যুবক অতর্কিত হামলা চালায়। এরপর তারা ওই রেস্তোরাঁয় যারা ছিলেন তাদের জিম্মি করে।

রাজধানীর গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতাল থেকে রবিউলের এক মামা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার ভাগনেকে আল্লাহ তুলে নিছে। আমরা গুলি লাগার খবর পেয়ে সাভার থেকে রওনা দিই। পথেই জানতে পারি রবিউল মারা গেছেন।’

ওই মামার সঙ্গে রবিউলের স্ত্রী, সন্তান ও অন্যান্য সদস্যরাও হাসপাতালে এসেছেন। ওই মামা জানান, রবিউলের সাত বছরের একটি ছেলে আছে। রবিউলের স্ত্রী সন্তানসম্ভবা। তাঁর গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জের কাটিবাড়ি।

সন্ত্রাসী হামলার খবর পেয়ে রবিউল ইসলাম ঘটনাস্থলে ছুটে যান। হাসপাতাল থেকে রবিউলের সহকর্মী ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, রবিউল ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উত্তর-মাদক টিমে কর্মরত ছিলেন। রবিউল বিসিএস পুলিশের ৩০ তম ব্যাচের সদস্য। রবিউল পরিবার নিয়ে রাজারবাগ পুলিশ লাইনে থাকতেন।

গুলশানের জিম্মি পরিস্থিতি সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে তদারক করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বাহিনীর শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। সরকারের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে, জিম্মিকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের দাবি দাওয়া জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। সবচেয়ে কম ক্ষয়ক্ষতির মাধ্যমে জিম্মিদের উদ্ধারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এদিকে আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলা চালিয়ে দেশি-বিদেশি নাগরিকদের জিম্মি করার ঘটনায় দায় স্বীকার করেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএস (ইসলামিক স্টেট)।



মন্তব্য চালু নেই