অনলাইন নির্যাতনের বর্ণনা দিলেন নারী মিডিয়াকর্মী

সুইডেনের এক নারী মিডিয়াকর্মী জানান, অনলাইনে তিনি প্রতিনিয়ত হুমকি ও নানাভাবে নির্যাতনের সম্মুখীন হন। আর এ নির্যাতনের ফলে প্রতিনিয়ত নানা ধরনের সমস্যায় পড়তে হয় তাকে। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে এসএমএইচ।

আলেক্সান্ড্রা প্যাসক্যালিডো একজন সুইডিস নারী মিডিয়াকর্মী ও লেখক। তিনি গ্রিক সভ্যতার ওপর লেখালেখি করেন। তার ক্যারিয়ার প্রায় ২০ বছরের। আর দীর্ঘ এ কর্মজীবনে নানাভাবে তার ওপর নির্যাতন চলে। সম্প্রতি তিনি তার ওপর চলমান সে নির্যাতনের বিষয় তুলে ধরেছেন।

তিনি বলেন, ‘আমাকে বলা হয়েছে একজন নোংরা পতিতা, একজন খুনে যাযাবর, ইহুদি, মুসলমান কসাই, গ্রিক পরজীবী, বিরক্তিকর অভিবাসী, স্টুপিড সাইকো, কুশ্রী মিথ্যাবাদী ও পক্ষপাতদুষ্ট ঘৃণাবাদী।’

তিনি আরও বলেন, ‘তারা আমাকে বলে বাড়িতে ফিরে গিয়ে আত্মহত্যা করতে। অন্যথায় তারা আমাকে হত্যা করবে বলেও হুমকি দেয়। তারা আমাকে গুলি করতে চায়। তারা আমার জিহ্বা কেটে দিতে চায়, আমার আঙ্গুল ভেঙে দিতে চায় একটির পর একটি। তারা আমাকে দলবদ্ধ ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনও করার হুমকি দিয়েছে।’

বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত দেশগুলোর একটিতে থেকেও এ নির্যাতনের বাইরে নন নারীরা। অনলাইনে নানাভাবে তাদের ওপর নির্যাতন চলে। তার প্রমাণ হাজির করলেন আলেক্সান্ড্রা।

আলেক্সান্ড্রা জানান, এ আক্রমণগুলোর অধিকাংশই আসে ব্যক্তিগত ব্যবহার্য নানা পার্সোনাল ডিভাইসে। প্রতিদিন সকালে এ ডিভাইসগুলোর দিকে তাকালেই এর কিছু কিছু পাওয়া যায়। এছাড়া রাতে ঘুমানোর সময়েও কিছু আসে।

তিনি জানান, মিডিয়াকর্মীদের প্রতিনিয়ত এসব হুমকি ও নির্যাতন অনলাইনে পেতে হয়। আর এ সমস্যা লাঘব করার জন্যও তিনি চিন্তাভাবনা করেছেন। এক্ষেত্রে করণীয় কী হতে পারে সে বিষয়ে তিনি কয়েকটি সুপারিশও তুলে ধরেছেন। এগুলো হলো-

১. সমস্যাটি গুরুত্বের সঙ্গে নিন এবং এর প্রভাব সম্পর্কে চিন্তা করুন।
২. নারী মিডিয়াকর্মীদের জন্য অনলাইন অপরাধ বিষয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করুন।
৩. সংবাদকর্মীদের পর্যাপ্ত ডিজিটাল নিরাপত্তা প্রশিক্ষণ দিন।
৪. অনলাইনে হয়রানি ও নির্যাতনের ঘটনায় সিনিয়র ব্যবস্থাপকদের অবহিত করুন এবং এ বিষয়ে আলোচনা করুন।
৫. সমস্যা বেড়ে ওঠার আগেই পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
৬. এ ধরনের ক্ষেত্রে কারিগরি, আইনগত ও মানসিক বিষয় নিয়ে চিন্তা করুন।
৭. প্রতিষ্ঠানের হয়রানি ও নির্যাতন বিষয়ে গাইডলাইন তৈরি ও তা মেনে চলতে গুরুত্ব দিন।
৮. নারীবিদ্বেষী মন্তব্য ও অন্যান্য বিষয় মডারেটের সুযোগ বৃদ্ধি করুন।
৯. অনলাইনে নির্যাতনের বিরুদ্ধে এডিটোরিয়াল রিসোর্স বৃদ্ধি করুন এবং প্রয়োজনীয় উপায়গুলো ব্যবহার করুন।
১০. সম্ভাব্য হয়রানি প্রতিরোধের পরিকল্পনা করুন।
১১. প্রতিষ্ঠানে অনলাইন নিরাপত্তা জোরদার করতে শক্তিশালী বিভাগ স্থাপন করুন। পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগ করুন। কর্মস্থলের অনলাইন নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নিন।



মন্তব্য চালু নেই