অতিরিক্ত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের বিপদজনক দিক

আপনার যদি যখন তখন অনেক বেশি ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের অভ্যাস থাকে তাহলে আপনার এই অভ্যাসটিকে পরিবর্তনের এখনই সময়। দীর্ঘদিন যাবৎ অতিরিক্ত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা অথবা ক্ষতিকর উপাদান সমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করার অনেক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে ত্বকে। আসুন তাহলে জেনে নিই অতিরিক্ত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের বিপদজনক দিকগুলোর বিষয়ে।

১। ইরিটেশন

দীর্ঘদিন যাবৎ ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করার প্রভাব নিয়ে করা ১৯৯৯ সালের এক গবেষণায় জানা যায় যে, স্বাভাবিক ত্বকে প্রতিদিন ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করলে ত্বকের কাজে বাঁধার সৃষ্টি করে এবং যন্ত্রণাদায়ক পদার্থের প্রতি ত্বকের সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি করে। এছাড়াও গবেষণায় আরো দেখানো হয় যে, ময়েশ্চারাইজারে যে সোডিয়াম লরেল সালফেট থাকে তা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় ত্বকের পানি কমায়। যা ত্বকের জ্বালা-যন্ত্রণার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।

২। ফলিকিউলিটিস

চুলের গোঁড়ার কোষ বা ফলিকিউল এর প্রদাহকেই ফলিকিউলিটিস বলে। ব্যাকটেরিয়া অথবা ভাইরাসের কারণে হয় ফলিকিউলিটিস। হাত, পা, পিঠ অথবা নিতম্বে হেয়ার ফলিকলের চারপাশে হোয়াইট হেডেড পিম্পল হয় বা লাল হয়ে ফুলে যায়। গবেষণায় দেখা যায় যে, ময়েশ্চারাইজারে যে ভিটামিন ই লিনোলিয়েট থাকে তা ফলিকলের সংস্পর্শে আসলে ডারমাটাইটিস বা চর্মরোগ সৃষ্টি করতে পারে।

৩। অ্যালার্জিক কন্টাক্ট ডারমাটাইটিস

২০০৮ সালের এক গবেষণায় জানা যায় যে, ময়েশ্চারাইজারের মত কসমেটিক পণ্যই অ্যালার্জিক কন্টাক্ট ডারমাটাইটিস এর মূল কারণ। এছাড়া ময়েশ্চারাইজারকে নিরাপদই ধরা হয়। কিছু ক্ষেত্রে এটি অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া ঘটাতে পারে। বেশিরভাগ মেয়েশ্চারাইজারেই সুগন্ধি থাকে যা সবচেয়ে সাধারণ অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী উপাদান এবং প্যারাবেনের উপস্থিতিই অ্যালার্জির ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।

৪। কন্টাক্ট আর্টিকেরিয়া

কখনো কখনো ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের ফলে খুব দ্রুত অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া হতে দেখা যায় নির্দিষ্ট স্থানে। এর ফলে ঐ স্থানে লাল হয়ে ফুলে যায়। এটি হয়ে থাকে ময়েশ্চারাইজারের অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী উপাদানের কারণে। তাই ময়েশ্চারাইজার কেনার সময় এর লেবেলের উপাদানগুলো ভালো করে পড়ে নিন।

মেয়েশ্চারাইজারে ৩ ধরণের উপাদান ব্যবহার করা হয় – Occlusives, Humectants ও Emollients। অকালসিভ ও ইমোলিয়েন্ট ত্বককে নরম করতে সাহায্য করে। অকালসিভ হচ্ছে ঘন পেট্রোলিয়াম জেলি যা ত্বকের উপরিভাগের স্তরে কাজ করে এবং আর্দ্রতা ধরে রাখে। ইমোলিয়েন্ট হচ্ছে ফ্যাটি এসিড (তেল ও লিপিড এবং ঘন স্টিয়ারিক এসিড) যা ত্বকের পুনঃনির্মাণে সাহায্য করে। ক্রিমের মত ময়েশ্চারাইজারে ইমোলিয়েন্ট বেশি থাকে।

হিউম্যাকটেন্ট (প্যান্থেনল, গ্লিসারিন ইত্যাদি) ত্বকের গভীর থেকে ময়েশ্চারাইজার টেনে উপরের স্তরে নিয়ে আসে। আর্দ্র জলবায়ুতে হিউম্যাকটেন্ট ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করলে আপনার ত্বক অনেক বেশি আর্দ্র হয়ে যাবে কারণ হিউম্যাকটেন্ট বায়ু থেকেও আর্দ্রতা টানতে থাকবে।

ময়েশ্চারাইজার তৈরির ফর্মুলায় এই ৩টি উপাদানই ব্যবহার করা হয়। তৈলাক্ত ত্বকের মানুষদের জানা উচিৎ যে অকালসিভ খুব ভারী ও চর্বিযুক্ত হয়। তাই অকালসিভ সমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করলে খুব সহজেই ঘাম আটকে যায় ও ব্রণের সৃষ্টি করে।



মন্তব্য চালু নেই