অতিউচ্চ যখন রক্তের চাপ

হৃদপিণ্ড রক্তকে ধাক্কা দিলে ধমণীর গায়ে যে প্রেসার বা চাপ সৃষ্টি হয় তাই হলো ব্লাড প্রেসার। পূর্ণ বিশ্রামে থাকা একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের রক্তের চাপ বা ব্লাড প্রেসার হওয়া উচিৎ ১২০/৮০ মিলি মিটার পারদ চাপ। এই চাপ স্বাভাবিক মাত্রা ছাড়িয়ে যখন অতিউচ্চ হয়ে যায় তখনি তাকে বলা হয় হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ।

ব্লাড প্রেসারে ১২০ দিয়ে হার্ট এর সংকোচনের সময় রক্তের চাপ এবং ৮০ দিয়ে হার্ট এর প্রসারণের সময়ে রক্তের চাপকে নির্দেশ করা হয়। প্রথম সংখ্যাটি সিস্টোলিক প্রেসার এবং দ্বিতীয় সংখাটি ডায়াস্টোলিক প্রেসার বলা হয়। তাই যখন উপরের প্রেসারটি ১৪০ বা তার উর্ধ্বে অথবা নীচের প্রেসারটি ৯০ বা তার উর্ধ্বে পাওয়া যায় তখন ধরে নিতে হবে রোগীর ব্লাড প্রেসার স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ধরে নেয়া হয়। তবে বয়সের উপর ভিত্তি করে এই মাত্রার কিছুটা তারতম্য হতে পারে।

উচ্চরক্তচাপে ভোগার শতকরা ৯৫ ভাগ কারণই এখন পর্যন্ত সঠিকভাবে জানা যায়নি। এই ৯৫ ভাগকে বলা হয় এসেনশিয়াল হাইপারটেনশন, বাকী ৫ ভাগ হলো সেকেন্ডারি হাইপারটেনশন। সেকেন্ডারির মধ্যে কিছু আছে কিডনির রোগ, কিছু হরমোনের সমস্যা জনিত রোগ, ধমনীর রোগ, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এবং গর্ভাবস্থা এ অবস্থার জন্য দায়ি হতে পারে।

উচ্চরক্তচাপের প্রাথমিক অবস্থায় তেমন কিছুই বোঝা যায় না। তবে এই রোগে মাথার পিছনের দিকে ব্যাথা, বেশি প্রসাব হওয়া, হঠাৎ হঠাৎ ঘেমে যাওয়া, বুক ধড়ফড় করার মতো সমস্যা হতে পারে। ব্লাড প্রেসার খুব বেশি হলে উপসর্গও বাড়তে পারে। দীর্ঘ দিন ব্লাড প্রেসার অনিয়ন্ত্রিত থাকলে তা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের স্থায়ী ক্ষতির কারণ হতে পারে।

হাইপারটেনশন চিকিৎসার প্রথম স্তরেই খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনতে হবে। খাবারে লবণের পরিমান কমিয়ে আনা, আতিরিক্ত শর্করা বা চর্বি জাতীয় খাবার না খাওয়া, ধুমপান বা এলকোহলের অভ্যাস থাকলে তা সম্পুর্ণ ত্যাগ করা, শরীরের বাড়তি ওজন কমানো, ডায়াবেটিস থাকলে তা নিয়ন্ত্রণ করা, নিয়মিত হাল্কা শরীরচর্চা করা, উপাসনা বা প্রার্থনা করতে হবে। এরপরেও যদি নিয়ন্ত্রণ করা না যায় সেক্ষেত্রে কার্ডিওলজিস্টের পরামর্শঅনুযায়ী ওষুধ খেতে হতে পারে।



মন্তব্য চালু নেই