অজানা রোগে আক্রান্ত মেহেদী হাসান

মেহেদী হাসান (৯)। জন্মের পর থেকে অজানা এক রোগে আক্রান্ত সে। শারীরিক কষ্টে জীবন বিষিয়ে উঠেছে তার।পরিবার থেকে সাধ্যের মধ্যে বিভিন্ন চিকিৎসা করানো হয়েছে। কিন্তু অর্থাভাবে আর চিকিৎসা করানো কিংবা ভালো কোনো ডাক্তার দেখানোও তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।

এমনকি রোগটা অজানা হওয়ায় সঠিক চিকিৎসা দেয়াটাই প্রধান সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। মেহেদী হাসানের গ্রামের বাড়ি নওগাঁর রানীনগর উপজেলার বেতগাড়ীতে। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে মেহেদী হাসান সবার ছোট। বাবা আবুল কালাম ভ্যানচালক এবং মা জাহানারা বেগম গৃহিণী।

বুধবার জেলার মান্দা উপজেলার কেশবপুর (ঝাঁঝর) গ্রামে এক কবিরাজের কাছে ছেলে মেহেদী হাসানকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন মা জাহানারা বেগম। পরনে প্যান্ট, গায়ে কালো জ্যাকেট এবং পায়ে সাদা জুতা। দূর থেকে তাকে দেখে বোঝার উপায় নেই যে, পোশাকের ভেতরে তার ফেটে যাওয়া শরীরটা ঢাকা রয়েছে। বেশি ফাটা রয়েছে দুই হাতে এবং দুই পায়ে।

মা জাহানারা বেগম বলেন, ছেলেটা নওগাঁ সদর হাসপাতালে স্বাভাবিকভাবেই জন্মগ্রহণ করে। জন্মের পর প্রতিটা বাচ্চার গায়ে এক ধরনের প্রলেপ থাকে। যা তখন তুলে ফেলা হয়নি বা পরিষ্কার করা হয়নি। তিনি আরো বলেন, মেহেদীর বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে তার শরীরের ফাটলও বাড়তে থাকে।

আমাদের সাধ্যের মধ্যে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ছেলের চিকিৎসা করিয়েছি। কিন্তু রোগটি অজানাই থেকে গেছে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে মা জাহানারা বেগম বলেন, ছেলেটা খেতে পারে না। কিছু ধরতেও পারে না। এমনকি ঠিকমতো শুয়েও থাকতে পারে না। তবে শীতের সময় বেশি সমস্যা হয়। গায়ে জামা কাপড় পরে থাকা খুবই অসুবিধা হয়।

ফাটাগুলোর মধ্যে কাপড় আটকে যায় এবং রক্ত বের হয়। অর্থাভাবে গত এক বছর ছেলের চিকিৎসা করাতে পারেননি। ছেলের জন্য খুবই কষ্ট হয়। প্রতিবেশীর কাছে জানতে পেরে খুব সকালে কবিরাজের কাছে নিয়ে এসেছি। কবিরাজ দেখে ৭৫০ টাকার হামদর্দ ও হারবাল জাতীয় ওষুধ দিয়েছে।এ বিষয়ে নওগাঁর সিভিল সার্জন কর্মকর্তা একেএম মোজাহার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এ ধরনের ঘটনা আমার জানা ছিল না।

এই প্রথম শুনলাম। তবে মেহেদী হাসানের পরিবারকে নওগাঁ সদর হাসপাতাল অথবা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। তিনি আরো বলেন, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হলে বেশি ভালো হয়। কারণ সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা আছেন।



মন্তব্য চালু নেই