অক্টোবরে চার দেশে কার র‌্যালি

`বিবিআইএন মোটর ভেহিকেল এগ্রিমেন্ট (এমভিএ)’ কার্যকর করতে অক্টোবরে বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল এই চার দেশে কার র‌্যালি অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া আগামী ৮ ও ৯ সেপ্টেম্বর এই চার দেশের ফোকাল (যুগ্ম সচিব) অফিসারদের মধ্যে ঢাকায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ওই বৈঠকে `মোটর ভেহিকেলস এগ্রিমেন্ট ফর দ্য রেগ্যুলেশন অব প্যাসেঞ্জার, পারসোনাল অ্যান্ড কার্গো ভেহিকুলার ট্রাফিক বিটুইন বাংলাদেশ, ভুটান, ইন্ডিয়া অ্যান্ড নেপাল` বা `বিবিআইএন মোটর ভেহিকল এগ্রিমেন্ট (এমভিএ) প্রটোকলের খসড়া চূড়ান্ত হবে। তারপর এটি অনুমোদন হওয়ার পর মোটরভেহিকল অ্যাগ্রিমেন্ট (এমভিএ) কার্যকর হবে।

সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা এ তথ্য জানিয়ে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে `বিবিআইএন মোটর ভেহিকল অ্যাগ্রিমেন্ট (এমভিএ)’ অনুসর্মথনের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

তিনি জানান, মন্ত্রিসভার বৈঠকে সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী বলেন, অক্টোবরে চার দেশ মিলে একটা কার র‌্যালি হবে। এই কার র‌্যালি শুরু হবে ভারতের ভুবনেশ্বর থেকে। কার র‌্যালিটি চারটি দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঢাক-চট্টগ্রাম হয়ে আবার ঢাকা হয়ে ভুবনেশ্বর গিয়ে শেষ হবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা বলেন, ১৫ জুন ভুটানের রাজধানী থেম্পুতে বিবিআইএন সড়ক পরিবহণ মন্ত্রীদের মধ্যে মিটিং হয়েছিল। ওই মিটিংয়ে বাংলাদেশের সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রী `বিবিআইএন মোটর ভেহিকেল এগ্রিমেন্টে (এমভিএ) সই করেন। এই সইয়ের আগে মন্ত্রিসভা গত ৮ জুন এটির অনুমোদন দিয়েছিল।

এগ্রিমেন্টে বলা ছিল, চুক্তিটি কার্যকর হবে চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশগুলো তাদের নিজস্ব প্রক্রিয়ায় রেটিফিকেশন বা অনুসমর্থনের পর। সড়ক পরিবহণ মন্ত্রণালয় থেকে এটি উপস্থাপন করা হয়েছে এবং মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছে। এখন অন্য দেশগুলো রেটিফাই করার পর এটি কার্যকর হবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, সড়ক পরিবহণ ও্ সেতু মন্ত্রী মন্ত্রিসভার বৈঠকে বলেন, বিবিআইএন মোটর ভেহিকেল এগ্রিমেন্ট কার্যকর করতে একটা প্রটোকল সই করতে হবে। আগামী ৮ ও ৯ সেপ্টেম্বর এই চারটি দেশের ফোকাল (যুগ্মসচিব) অফিসারদের মধ্যে ঢাকায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ওই বৈঠকে প্রটোকলের খসড়া চূড়ান্ত হবে। তারপর এটি অনুমোদন হওয়ার পর মোটর ভেহিকেল এগ্রিমেন্ট (এমভিএ) কার্যকর হবে।

জানা গেছে, বিবিআইএন মোটর ভেহিকেল এগ্রিমেন্টের ফলে বাংলাদেশসহ চারটি প্রতিবেশী দেশের স্থলপথেও যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল করবে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট দেশের রুট পারমিট নিতে হবে যান মালিকদের। দিতে হবে নির্ধারিত ট্রানজিট ফিও।

যেসব দেশের স্থলপথে যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল করবে সেসব দেশের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটান। প্রশাসনিক ভাষায় চার দেশকে সংক্ষেপে বলা হচ্ছে ‘বিবিআইএন।’

২০১৪ সালে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠিত সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে বিবিআইএন মোটর ভেহিকেল এগ্রিমেন্ট (এমভিএ) সই হওয়ার কথা থাকলেও একটি দেশের অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়া শেষ না হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। অবশেষে গত ১৫ জুন ভুটানের রাজধানী থিম্পুতে এই চুক্তি সম্পন্ন হয়।

`বিবিআইএন মোটর ভেহিকেল এগ্রিমেন্ট (এমভিএ)` এর আওতায় যান চলাচলের রুট পারমিট নিতে হবে। এক রুটের গাড়ি অন্য রুটে যেতে পারবে না। এক দেশের গাড়ি আরেক দেশের ভেতর দিয়ে যাওয়ার সময় মাঝপথে যাত্রী নিতে পারবে না। প্রতিটি যানবাহনের জন্য ট্রানজিট ফি দিতে হবে। যে দেশের ভেতর দিয়ে যানবাহন যাবে, সেই দেশ ট্রানজিট ফি নির্ধারণ করবে। যদি নেপাল থেকে বাংলাদেশে একটি যানবাহন প্রবেশ করে তাহলে ভারত ও বাংলাদেশকে ট্রানজিট ফি দিতে হবে। নিষিদ্ধ পণ্য বহন করা যাবে না। যে দেশের ওপর দিয়ে যানবাহন যাবে, সেই দেশের কর্তৃপক্ষ ইচ্ছা করলে তা সার্চ ও ইন্সপেকশন করতে পারবে।

ভবিষ্যতে চার দেশের সম্মতিতে এই যোগাযোগে অন্য দেশের যুক্ত হওয়ার সুযোগও চুক্তিতে রাখা হয়েছে। তিন বছর পরপর এই চুক্তি নবায়ন হবে। কোনো দেশ চাইলে ছয় মাসের নোটিশ দিয়ে চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিতে পারবে।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৯ সাল থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের ঢাকা-কলকাতা, ঢাকা-আগরতলা রুটে বাস চলাচল চালু আছে। গত ৬-৭ জুন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ সফরকালে কলকাতা-ঢাকা-আগরতলা ও ঢাকা-গুয়াহাটি রুটে বাস চলাচলের বিষয়ে দুটি চুক্তি করে যান। বিবিআইএন মোটর ভেহিকল এগ্রিমেন্ট (এমভিএ) এর মতো চার দেশীয় চুক্তি এটাই প্রথম।



মন্তব্য চালু নেই